ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

পাকিস্তানি ভূত

মুহম্মদ জাফর ইকবাল

প্রকাশিত : ১০:৪০ এএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১১:০০ এএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার

দেশের সবাই কি জানে- আমাদের দেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পাকিস্তানি ভূতেরা বসবাস করে? আমি তার অকাট্য প্রমাণ একবার পেয়েছিলাম ২০১৪ সালের ২৬ মার্চ, যখন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের জন্য `লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা` আয়োজন করা হয়েছিল।

আমি তাদের ছবি দেখে আতঙ্কে চমকে উঠেছিলাম- সবার মাথায় সবুজ বেসবল ক্যাপে পাকিস্তানি সাদা চাঁদ-তারা। খুব কাছ থেকে দেখে আমি বুঝতে পারলাম যে, আসলে বঙ্গবন্ধুর ছবি এবং নিচের লেখাটি এমনভাবে সাজানো হয়েছিল, যেন একটু দূর থেকেই সেটাকে পাকিস্তানি চাঁদ-তারা মনে হয়। এটি কি কাকতালীয় একটা ঘটনা? মোটেও নয়।

যতদূর মনে পড়ে, সেবার একটি স্পন্সর ছিল ইসলামী ব্যাংক এবং নিশ্চিতভাবে সেটি ছিল তাদেরকে খুশি করার একটা চেষ্টা। সেবার যখন প্রায় আড়াই লাখ শিশু-কিশোর জাতীয় সঙ্গীত গাইছিল, তখন সবার মাথায় পাকিস্তানি চাঁদ-তারার সেই ছবি দেখে নিশ্চয়ই এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসবাসকারী পাকিস্তানি ভূতেরা আনন্দে অট্টহাসি করে উঠেছিল।

তারা আবার আনন্দে অট্টহাসি করে উঠেছে। কারণ এবারের বিশ্বকাপের জার্সির রঙ সেই পাকিস্তানি সবুজ ও সাদা! যারা এই জার্সি তৈরি করেছেন, তারা কি জানেন না- আমাদের দেশের জাতীয় পতাকার রঙ লাল-সবুজ? এই দেশের একটি শিশু পর্যন্ত কিছু একটা আঁকতে হলে সেখানে সবার আগে লাল ও সবুজ রঙ ব্যবহার করে।

আমাদের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জার্সিতে লাল রঙটুকু কোথায়? তারা কি জানে না- আমাদের জাতীয় পতাকার মাঝখানের লাল রঙটি শুধু একটি রঙ নয়; এটি তার চেয়ে অনেক বড় একটা কিছু? এই লাল রঙটি যে আমাদের আপনজনের বুকের রক্ত দিয়ে রঙ করা হয়েছে, তারা সেটি জানে না?

আমাদের বিশ্বকাপ দলের এই পাকিস্তানি জার্সিটির আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। সারা পৃথিবীর মধ্যে মাত্র দশটি দেশের একটি বাংলাদেশ এই বিশ্বকাপ খেলবে। খেলার মাঠে আমরা তাদের লাল-সবুজ রঙের জার্সিতে দেখতে চাই; পাকিস্তানি জার্সিতে নয়।

তার সঙ্গে আমরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে থাকা এসব পাকিস্তানি ভূতের পরিচয় জানতে চাই। তারা কারা?

(বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়ার পর বিসিবি জার্সিটি বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে -বি. স.) 

লেখক ও অধ্যাপক