ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

শেয়ার বাজার নিয়ে কারসাজী করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৯ এএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১১:০০ এএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার

শেয়ার বাজার নিয়ে কেউ কোন রকমের কারসাজী করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি কোন রকম গেইম খেলতে চায় তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপণী ভাষণে তিনি একথা বলেন।

শেয়ার বাজারের রিস্ক ফ্যাক্টরটা বিনিয়োগের সময়ই মাথায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ আমি বলবো এটা অনেকটা জুয়া খেলার মত। কাজেই যারা যাবে (বিনিয়োগ করবে) তাদেরকে সেটা বিবেচনা করে যেতে হবে। তার দায়িত্ব অন্য কেউ নেবে না।’

শেখ হাসিনা শেয়ার বাজার প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই শেয়ার বাজার নিয়ে অতীতে অনেক ঘটনা ঘটেছে। এটা যেন স্থিতিশীল থাকে সেজন্য যা করণীয় তা আমরা করবো।’

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারিদের সচেতনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শেয়ার বাজারে যাচ্ছে তাদেরতো জানাই উচিত যে, এখানে গেলে লাভও যেমন হবে লোকসানও তেমন হবে। যেকোন সময় তারা লাভ করতে পারে এবং যে কোন সময় লোকসান হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘লাভ করলে খুশি আর লোকসান হলেই সরকারের দোষ এটাতো ঠিক নয়।’

সরকারের পক্ষ থেকে শেয়ার বাজার ব্যবস্থাপনায় যা যা করণীয় তাঁর সরকার তা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে বাজার উঠে যাওয়া বা পড়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো যতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাঁর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

‘তবে, কোন কোম্পানীর শেয়ার কিনছে, তার প্রকৃত অবস্থাটা কি, এখানকার শেয়ার কিনলে লাভ হবে কি না, এটা যিনি কিনবেন তার বিবেচনার বিষয়। এটা আমি আপনি কেউ করে দিতে পারবোনা। এটা তাকেই করতে হবে’।

প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগকারিদের আশ্বস্থ করে বলেন, ‘আমি বলবো খুব বেশি শংকিত হওয়ার কিছু নেই। এটা কিভাবে ঠিক করা যায় সেটা আমরা দেখবো।’

এজন্য কয়েকদিন আগে রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি এই সংসদ ভবনে অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, ব্যাংকিং সেক্টরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি বিস্তারিত আলাপ করেছেন বলেও জানান।

প্রধানমন্ত্রী সংসদে পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়ে বিভিন্ন সংসদ সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রেক্ষিতে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার কোন ক্রটি থাকলে সরকার এটি গভীরভাবে ক্ষতিয়ে দেখবে বলে উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্ধ পাটকলগুলো চালুর সময়ই তাঁর একটা শর্ত ছিল এগুলোকে লাভজনক করতে হবে এবং এজন্য প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরও শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছে না।

তিনি মিল মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা মিল চালাবেন আর প্রতিবার সরকারের কাছ থেকে টাকা এনে শ্রমিকদের বেতন দেবেন সেটা কেমন কথা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিলে লাভ না হোক অন্তত শ্রমিকের বেতনটাতো দিতে পারতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিলগুলোকে লাভজনক কিভাবে করা যায়। আর ব্যবস্থাপনায় কোন ধরনের সমস্যা রয়েছে কি না সেটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।’

এক্ষেত্রে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘ বিমানের যে সমস্যা ছিল সেটা কিন্তু আমরা কাটিয়ে উঠেছি।’

তিনি বলেন, ‘দেখা যায় যারা কর্মরত তারাই আত্মঘাতী কাজ করে। সমস্যাটার সৃষ্টি করে নিজেদের সম্পদ বা দেশের সম্পদ রক্ষা না করে সেখান থেকে লুটপাটের একটা জায়গা করে নেয়। কাজেই সেই লুটপাটটাকেই আগে আমাদের বন্ধ করতে হবে। সেটাকেই এখন আমাদের ধরতে হবে এবং আমরা ধরবো। যেমন বিমানে করেছি এখানেও করবো।’

প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে পুণরায় ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নিজ নিজ এলাকায় অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর স্মরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন।

সূত্র: বাসস

এমএইচ/