ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

থাইরয়েড মেলায় দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৫৬ পিএম, ২ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:১০ পিএম, ২ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার

তিনদিন ব্যাপি রাজধানীতে চলছে থাইরয়েড মেলা। ‘বিশ্ব থাইরয়েড দিবস ২০১৯’ উপলক্ষ্যে  দি থাইরয়েড সেন্টার লি. বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো এই মেলার আয়োজন করে। রাজধানীর সুবাস্ত ইত্তেহাদ স্কয়ারে চলছে এ মেলা চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (১লা মে) সকাল ১১টায় মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ এ. কে. এম ফজলুল বারী, থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক, নিনমাস, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডাঃ মঞ্জুরুল আলম, থাইরয়েড সার্জারী বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া আগত রোগী ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় অধ্যাপক ডাঃ এ. কে. এম ফজলুল বারী বলেন, তিনদিন ব্যাপি এ মেলায় আমরা প্রায় ৩০০ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। এছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার কম মূল্যে সুচিকিৎসা এবং যাদের থাইরয়েড হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের সল্প মূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি।

অধ্যাপক ডাঃ এ. কে. এম ফজলুল বারী একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ থাইরয়েড গ্রন্থির নানা রোগে ভুগছে। প্রতি ৭ জন রোগীর ৫ জনই মহিলা। ৩৯.১ শতাংশ মানুষ আয়োডিনের অভাব জনিত সমস্যায় ভুগছেন। আয়োডিনের অভাবে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটছে না। শতকরা ১০.৫ ভাগ লোক আয়োডিনের অভাবে গয়টারে (আইডিজি) আক্রান্ত। এক সময় দেখা যাচ্ছে তাদের গলার নিচের অংশ ফুলে যাচ্ছে। শতকরা ০.১ ভাগ লোক জন্মগত ভাবেই এ রোগে আক্রান্ত। এ সমস্যা থাকার কারনে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটছে না। শতকরা ২৬ ভাগ শিশু আয়োডিনহীনতায় ভুগছে। এ সকল আক্রান্ত ব্যক্তির অধিকাংশই চিকিৎসা সেবার আওতায় নেই। এই পেক্ষাপটে ২০০৭ সালে দি থাইরয়েড সেন্টার লিঃ এর যাত্রা শুরু হয়।

তিনি বলেন, দি থাইরয়েড সেন্টার বিগত এক যুগে হাজার হাজার থাইরয়েড রোগীকে অল্প মূল্যে চিকিৎসা প্রদান ও সাধারণ মানুষের মধ্যে থাইরয়েড রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা এবং প্রতি শুক্র ও শনিবারে এখানে বিনামূল্যে রোগী দেখার ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া প্রতি শনিবার থাইরয়েড স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের আওতায় ৫০০০ টাকার পরীক্ষা মাত্র ১৫০০ টাকায় করার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে বর্তমানে প্রায় ৫,০০০ নিয়মিত সদস্য রয়েছে।

ডাঃ বারী বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের আইকিউ কম থাকার মূল কারণ আয়োডিনের অভাব যা সচেতনতার মাধ্যমে আমরা পূরণ করতে পারি। লবনে আয়োডিন যুক্ত করে ও আয়োডিনযুক্ত খাবার গ্রহনের মাধ্যমে এই সমস্যা এবং গয়টার জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার কারণে ঐ অঞ্চলে গয়টার সমস্যা রয়েছে, তিনি থাইরয়েড স্ক্রিনিং এর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। থাইরয়েড গ্লান্ড মাদার গ্লান্ড তাই এর যত্ন নেওয়া প্রতিটি মানুষের সুস্থ থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

তিনি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত থাইরয়েড চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি ‘রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি’ ও ‘মাইক্রো ওয়েভ’ এর মাধ্যমে টিউমার অপসারণের পদ্ধতি নিয়ে কথা বলেন।

তিনি জানান, থাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমার হলেই অপারেশন করতে হবে এমনটি নয়। বিনা অপারেশনে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি, মাইক্রোওয়েভ ও লেজার ব্যবহারের মাধ্যমে, কোন কাঁটা ছাড়া শুধু সুইয়ের মাধ্যমে টিউমার অপসারণ করা যায়। তাতে রোগীকে অজ্ঞান করার প্রয়োজন পড়ে না, কিংবা রোগীকে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন পড়ে না এবং এই পদ্ধতির কোন বড় ধরনের পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই, খরচও কম হবে।টিউমার এ্যাবলেশনের পদ্ধতি দেশের মানুষের থাইরয়েড সমস্যা ও লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসায় অবদান রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

এসি