ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নকল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে এনবিআর: মোশাররফ হোসেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:১৭ পিএম, ২ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:২১ পিএম, ২ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার

সিগারেট, কসমেটিক্স ও খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির নামে বাজারে সরবরাহ করা নকল পণ্যের সয়লাব বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, দেশের বাজারে খাদ্যপণ্য, বিড়ি-সিগারেট ও কসমেটিক্সের আসল পণ্যের বাইরে বহু নকল পণ্যের সরবরাহ দেখা যায়। এসব নকল পণ্যের সরবরাহ বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। এখন থেকে এনবিআর’ও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ‘ইকোনমিক রিপোর্টার ফোরাম’(ইআরএফ)-এর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। বাজেট আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল। এতে ইআরএফ-এর পক্ষ থেকে এনবিআরের কাছে ১১ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম।  এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য ফিরোজ শাহ আলম, কানন কুমার রায় প্রমুখ।

ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল স্বাগত বক্তব্যে বলেন, দেশে আয় বৈষম্য বাড়ছে। এটা কমানোর জন্য জন বান্ধব রাজস্ব নীতি প্রয়োজন। এনবিআর গত ৩০ বছর অটোমেশন হচ্ছে। কিন্তু দৃশ্যমান বেশি নেই। অটোমেশন দৃশ্যমান হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, দেশে কর সংগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু কর আদায়ের পরিধি সেই হারে বাড়েনি। তাই কর আদায়ের পরিধি বাড়ানো দরকার। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি বাড়ছে। কিন্তু সাধারণ করদাতারা তার সুফল কতটুকু পেয়েছে সে ব্যাপারে প্রশ্ন রয়েছে। তাই কর অব্যাহতির সুফল যেন সাধারণ করদাতারাও পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

এসময় ইআরএফ-এর পক্ষ থেকে এনবিআরের কাছে বাজারে নকল পণ্যের সরবরাহ বন্ধ ও করসেবা সহজীকরণসহ ১১ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম। প্রস্তাবনা গুলোর মধ্যে রয়েছে- করদাতাদের সুবিধার্থে কর সেবা সহজীকরণ, রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট আপগ্রেড করা, এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানো,কর সচেতনতা তৈরি বা কর প্রদানে সচেতনতা বাড়াতে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রচারণা চালানো, প্রত্যক্ষ কর আদায়ে সংস্কার করা।

এছাড়া করদাতাদের বিরোধ নিষ্পত্তি বা মামলা জট কমানোর জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) ব্যবস্থাকে অধিকতর কার্যকর করা,ভ্যাট আদায়ে আরও স্বচ্ছতা আনা, এসআরও জারি করে কর ছাড়ের কারণ এবং সম্ভাব্য কর ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ রাখা, ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে আরও কার্যকর করা এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে করদাতাদের কাছে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা।

অন্যদিকে, ইআরএফ সদস্যদের জন্য ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কাস্টমস হাউজ, আয়কর ও ভ্যাট অফিস পরিদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া .সংবাদকর্মীদের সুবিধার্থে ভারতের ন্যায় বাজেট অধিবেশন বিকেলের পরিবর্তে সকালে শুরু করার দাবি তুলে ধরা হয়।

ইআরএফ এর প্রস্তাবনার প্রেক্ষাপটে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করপোরেট কর হারে ছাড় দিলে ব্যবসা বাড়বে, এমন নিশ্চিয়তা দিলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে। ভ্যাটের হার কেমন হবে, তা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করেছেন অর্থমন্ত্রী। ব্যবসায়ীরা তা মেনেও নিয়েছেন। আগামী অর্থবছরের বাজেট কার্যকরের দিন থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বরের (টিআইএন) ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। কারণ, অনেকেই অনৈতিকভাবে টিআইএন নেয়।

কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ২৫ শতাংশ কর দেয়। কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে করের হার কমে আসবে। তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিগুলোকে স্বচ্ছতার সঙ্গে চলতে হয়। এ কারণে অনেক কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয় না।

তিনি বলেন, আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি।

কোন সময়ের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বিশেষ সুবিধা পাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টাইম ফ্রেমটা স্টক এক্সচেঞ্জ ও আইসিবিসহ স্টেকহোল্ডাররা নির্ধারণ করবেন। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেসব কোম্পানির অস্তিত্ব নেই, সেসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন না।

আরকে//