ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আয়ারল্যান্ডে ‘নিরাপত্তা’ ভাড়া নিয়েছে বাংলাদেশ দল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩২ পিএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলার পর বিদেশের মাটিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে খুব সতর্ক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেয়ার আগে আয়ারল্যান্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তাই ভালোভাবে জেনেই দেশ ছেড়েছে মাশরাফির দল।

আর তাই অতিরিক্ত নিরপত্তার কথা চিন্তা করে সিরিজ চলাকালে দৈনিক এক হাজার ৬০০ ইউরোতে সিকিউরিটি টিম ভাড়া করেছে বিসিবি। মোট চারজন নিরাপত্তাকর্মীর সে বহর দুই দিন হলো দলের সঙ্গে যাতায়াত করছে।

কিন্তু কারো সঙ্গেই নেই কোনো অস্ত্র, যা দেখে দলের ম্যানেজারের মিনহাজুল আবেদিন অনেকটা রসিকতার সঙ্গেই বললেন, ‘তাহলে ওদের আর আমার মাঝে পার্থক্য কী?’ হ্যা পার্থক্য আছে। অন্তত গতকাল হোটেল থেকে ম্যালাহাইড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে যাওয়ার পথে দুজনের পাইলট বাইক আর একটা মিনি ভ্যান যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ দলের গাড়িবহরে। আয়ারল্যান্ডে যা যথেষ্ট বলেই মনে করছেন মিনহাজুল।

ক্রাইস্টচার্চের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের কাছে নিরাপত্তা এখন অনেক বড় একটা ইস্যু। সে হামলার প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশ তাই ডাবলিনের মত ছিমছাম শহরে এসেও নিরাপত্তাহীনতা বেশ সতর্ক।

কিন্তু যে দেশের প্রেসিডেন্টের বাড়ির সামনে নিরাপত্তারক্ষী থাকেনা, সে দেশের একটা ক্রিকেট দলের জন্য ভিআইপি প্রটোকল কতটুকু প্রয়োজন, এমন কথা চিন্তা করেই স্বাভাবিক নিরাপত্তা দিয়ে আসছিল দেশটি। কেননা, ক্রাইস্টচার্চের মত ঘটনার ইতিহাস তাদের নেই। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার সতর্ক প্রহরা আছে। তাই বলে ভিআইপির জন্য সশস্ত্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপ নেই।

দুইবার আয়ারল্যান্ড সফর করে মিনহাজুলও জেনে গেছেন, এখানে কোথাও কি আপনার নিরাপত্তা ঝুঁকি মনে হচ্ছে? এরা তো ভাবতেও পারে না যে এখানে সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে।’

ডাবলিনে বাংলাদেশ দলের ঠিকানা ক্যাসলনক হোটেল, ক্লনটার্ফ কিংবা ম্যালাহাইড ক্রিকেট ক্লাব মাঠ কোথাও নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি যেমন নেই, ঝুঁকিও চোখে পড়েনি। এমনকি ব্যস্তসমস্ত সিটি সেন্টারেও মুহূর্তের জন্য অনিরাপদ মনে হওয়ার কোনো কারণ নেই।

ইদানীং ইংল্যান্ড থেকে আসা প্রবাসীরা ডাবলিনে আসছেন, তার প্রধান কারণ ডাবলিনের শ্রেয়তর আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা।

ডাবলিন কার্যত শহর তবে চেহারায় আর দশটা ইংলিশ গ্রামের মতো, শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ। বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ম্যাচের ভেন্যু ম্যালাহাইড ক্রিকেট ক্লাব মাঠের অন্য নামও ‘দ্য ভিলেজ’।

নিউজিল্যান্ড আট দশটা উন্নত সভ্য দেশের তালিকাভুক্ত। ক্রাইস্টচার্চ অত্যান্ত পরিছন্ন একটি শহর। ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা বাদ দিলে ডাবলিনের মতোই শান্তিপূর্ণ। কিন্তু কে জানতো এমন একটি সুন্দর শহরে এক সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০ জন মানুষ মারা যাবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত বলেই হয়তো পরিবর্তিত বিশ্বের হাওয়া হয়তো এখনো গায়ে নিচ্ছে না আয়ারল্যান্ড।

ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের আর্থিক অবস্থাও মুমূর্ষু, এদের চুলাই জ্বলে বাংলাদেশি একটি কোম্পানির বিপণন দক্ষতার ওপর। তাই ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ‘এমওইউ’ স্বাক্ষরের সময় নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে বেশি গাঁইগুঁই করেনি বিসিবি।

তবে একেবারে অরক্ষিত ছেড়েও দেয়নি ক্রিকেটারদের। নিজেদের অর্থে নিরাপত্তা দল ভাড়া করে দেওয়া হয়েছে, চারজন রক্ষীর জন্য দৈনিক এক হাজার ৬০০ ইউরো মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দেড় লাখ।