ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

মা পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ

আজাদুল ইসলাম আদনান

প্রকাশিত : ০৬:১৬ পিএম, ১২ মে ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৬:২১ পিএম, ১২ মে ২০১৯ রবিবার

(ফাইল ফটো)

(ফাইল ফটো)

‘মধুর আমার মায়ের হাসি, চাঁদের মুখে ঝড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার, মাকে মনে পড়ে’ সুধীরলাল চক্রবর্তীর এ গানের কথাই মনে করিয়ে দেয় প্রতিটি মায়ের প্রতি সন্তানের গভীর ভালোবাসার কথা।

‘মা’ শব্দটির মধ্যেই একটা মমত্ববোধ, ভালোবাসা ও আবেগ কাজ করে। পৃথিবীর একমাত্র এ শব্দটিই সব কিছুকে ছাপিয়ে যায়। প্রতিটি সন্তানের জন্য মা’ পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।

সন্তানকে গর্ভে নিয়ে কত রাত না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন মা।

খেতে পারেন না ঠিকমত, অবচেতন মনে দিনগুনেন কবে পৃথিবীর মুখ দেখবে সাত রাজার ধন। সন্তান যখন জন্ম নেয়, যুদ্ধের ময়দানের মত রক্তাক্ত হন মা। কিন্তু সন্তানের মুখের দিয়ে চেয়ে অবলিলায় সে কষ্টের কথা ভুলে যান।

গর্ভে থাকাকালীন প্রতিটি সন্তান মায়ের রক্ত যেমনটা চুষে খায়, তেমনি পৃথিবীতে আসার পর মায়ের বুকের দুধই তার জীবনের প্রথম খাদ্য ও একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন।

তাই তো সৃষ্টিকর্তা ও তার প্রেরিত পয়গম্বর রাসূল (স.) সন্তানের প্রতি মায়ের এ ত্যাগের কথা প্রতিটি মানুষকে স্মরণ করে দিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তোমাদের মায়ের সঙ্গে সদাচারণ কর।

মায়ের অসামন্য ত্যাগের কথা মনে করে আল্লাহর রাসূল প্রতিটি মানুষকে তার বাবার চেয়ে তিন গুন বেশি ভালোবাসতে বলেছেন।

সন্তানের কাছেও তাই সবচেয়ে আপন ও প্রিয় হচ্ছেন তার মা। জন্মের পরে তিল তিল করে মা-ই শুধু তার হৃদয়ের ধন সন্তানকে বড় করে তোলেন সুন্দর একটি আগামীর জন্য।

হাজারো কষ্টকে তুচ্ছজ্ঞান করে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে সদা ব্যাকুল থাকেন সবচেয়ে কাছের এই মানুষটি। সন্তান, স্বামীকে ভালো রাখতে কত মিথ্যে বলতে হয় তাকে।

বিদেশ ফেরত সন্তান যখন বাড়িতে আসে আসে, বাড়ির অন্যসব যেখানে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, তখন মা ব্যস্ত সন্তানের আদর, যত্নে নিয়ে। না খেয়েও তাকে বলতে হয় খেয়েছি, না পড়েও বলতে হয় অনেক সুখে আছে। প্রতিটি মা-ই এমন মিথ্যে বলে আমাদের জীবনটাকে সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে তুলে দেন। প্রতিটি মা-ই একেকজন মিথ্যেবাদী।

শৈশব-কৈশোরের গণ্ডি পেরিয়ে টগবগে যুবক বা বৃদ্ধের কোটায় পা ফেলার পরও মায়ের কাছে সে নিতান্তই সন্তান। ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’- এ প্রার্থনা সর্বদা মায়ের মনেই প্রতিধ্বনিত হয়। আর কোন আপনজনের মুখে এটা মানায় না।

পৃথিবীব্যাপী যতজন, যতভাবে গবেষণা করেছেন সবাইকে একমত, মানব জীবনের যত ভালোবাসা আর অটুট বন্ধনের নজির আছে, তার মধ্যে ‘মা-সন্তান’র বন্ধনই সবচেয়ে সুদৃঢ় ও অটুট।

মমতাময়ী মায়ের কাছেই সন্তানের হাজারো বায়না। মনের মাঝে লুকানো কথাগুলো কেমন করে জানি জেনে যান এই মানুষটি। সৃষ্টিকর্তার পরই যাকে দেবতা মানি তিনি হলেন মা। তাই, ‘মা’কে ভালোবাসতে কখনও নির্দিষ্ট দিন, সময় লাগে না। মা সব সময় ভালোবাসার, ভালো লাগার এক অমীয় সুধা।

মমতাময়ী এ মায়ের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মা দিবস’।

দুনিয়ার লাখো-কোটি মানুষের মতো বাংলাদেশেও মন-প্রাণ উজাড় করে প্রতিটি শ্রেণি পেশার মানুষ জানাচ্ছে অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। ধনী-নির্ধন সব মা-ই আজকের দিনে শ্রদ্ধায় সিক্ত হোক, দীর্ঘায়ু হোন তারা, এটাই হোক কামনা, ভালো থাকুক প্রতিটি মা।

 

এসএইচ/