ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

রোজার স্বার্থকতা ও সফলতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৯ পিএম, ১৬ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার

রমজান মাসতো তাকওয়া, উন্নত নৈতিকতা ও মানবতাবোধ সৃষ্টির বীজতলা। এখানে সৃষ্ট তাক্বওয়া আল্লাহর ভয়, নৈতিকতা, বঞ্চিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, অপর মুসলিম ভাইয়ের প্রতি সংহতি জীবনের বিস্ত‍ৃত ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে। লালন করতে হবে এর অনুশীলন। এভাবেই রমজানের সুফল পাওয়া যাবে। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা সার্থক হবে। সমাজে ও রাষ্ট্রে অনাচার হবে না। অশ্লীলতা চলবে না। সন্ত্রাসের প্রতিরোধ হবে। অসহায় মানুষের আহাজারী বন্ধ হবে। তাদের প্রতি সহমর্মিতা বৃদ্ধি পাবে। মানুষের প্রতি মানুষের দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হবে। আর এর ফলশ্রুতিতে আমরা পাব সুখী ও সমৃদ্ধ একটি সমাজ ও রাষ্ট্র।

রমজানে রোজাদার যে আল্লাহর ভয়ে স্বেচ্ছায় ও স্বতঃস্ফ‍ূর্তভাবে পানাহার ও অন্য নিষিদ্ধ কাজগুলো পরিহার করে, সেই আল্লাহর ভয়েই সে বছরের বাকী এগার মাসগুলোতে যাবতীয় অন্যায় ও অপরাধ পরিহার করবে। বাদ দিবে সকল ধরনের নাফরমানী। যে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির লাভের আশায় রোজাদার রমজান মাসে মসজিদমুখী হয়েছে। তিনি সে একই আশায় মসজিদ থেকে আর ফিরবেন না। রমজানের দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজাদার অনাহারী মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পেরেছে। রমজানের পরও সে তা ভুলবে না। তাদের প্রতি তার সাহায্যের হাত সদা প্রসারিত থাকবে।

সওয়াবের আশায় অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর মধ্য দিয়ে তার মাঝে বদান্যতার যে গুণ সৃষ্টি হয়েছে তা হারিয়ে যাবে না। বরং রমজানের পরেও তার অনুশীলন করবে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের মাঝে মাঝে দাওয়াত করে খাওয়ার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখবে। এতে পারস্পরিক বন্ধন বৃদ্ধি পাবে।

রমজানের পর কোরআন তেলাওয়াত বন্ধ হবে না। আল্লাহ তায়ালার এ মহান কিতাবের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে। কোরআন বুঝার চেষ্টা থাকবে, তারাবীর মধ্য দিয়ে নফল নামাজ পড়ার যে অভ্যাস সৃষ্টি হয়েছে এবং সেহরীর জন্য শেষ রাতে ওঠার যে অভ্যাস হয়েছে, সে অভ্যাস জারি রেখে নিয়মিত রাতের শেষ প্রহরে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে ধর্ণা দিবে। এতে বান্দার আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জিত হবে ও ঈমানী মজবুতি বৃদ্ধি পাবে।

এভাবে রমজানের সামগ্রিক শিক্ষা ও প্রেরণা রমজানের পরবর্তী জীবনকে পরিচালিত করলেই রমজানের রোজা স্বার্থক ও সফল হবে। আমরা পুরো বছরই রমজানের সুফল ভোগ করতে পারবো। আর রোজা যে উদ্দেশ্যে ফরজ করা হয়েছে তা সফল হবে।

তথ্যসূত্র : মাওলানা হারুনুর রশিদের রমজানে করণীয় ও বর্জনীয় গ্রন্থ।

এএইচ/