ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

‘ড্রাগের চেয়েও মারাত্মক সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি’  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৬ এএম, ১৮ মে ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ১০:৪০ এএম, ১৮ মে ২০১৯ শনিবার

সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে মনোবিজ্ঞানীরা। ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে মানসিক চাপ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মনোবিজ্ঞানী মেহতাব খানম বলছেন, সোশাল মিডিয়ার কারণে বিশেষ করে পরিবারের ভেতরেও নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

কাউন্সেলিং-এর জন্যে যারা আসছেন তারা তাকে এবিষয়ে কী ধরনের সমস্যার কথা বলছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে খানম বলেন, কিশোর-কিশোরীদের বাবা মায়েরা কিন্তু ভীষণ সংগ্রাম করছেন।

‘কারণ রাতের পর রাত জেগে বাচ্চারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকছে, পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। তারা বুঝতে পারছেননা কিভাবে সন্তানের সাথে সম্পর্ক ঠিক রেখে সহায়তা করবেন।’

তার কাছে কাউন্সেলিং নিতে আসা শিশুদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা অনেক সময় বলছেন অভিভাবকদের কারণে তাদের কৈশোর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা পড়াশোনার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে পড়ালেখার কাজও দেওয়া হয়। কিন্তু বাবা মায়েরা বুঝতে চায়না।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কেন মানসিক চাপ বাড়ায়?

মেহতাব খানম বলেন, ‘এখন সম্পর্কগুলো দ্রুত হয়ে যাচ্ছে । সহজেই একজনের সাথে আরেকজনের যোগাযোগ হচ্ছে। একারণে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, একাধিক সম্পর্ক-এসবও বেড়ে যাচ্ছে অনেক।’

অনেক সময় ফেসবুকে এমন কিছু দেখছে যা তাদের ওপর প্রভাব ফেলছে, হতাশও হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে ড্রাগের আসক্তির চেয়েও সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে এটা।

তিনি বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে চিন্তিত। ড্রাগ যখন নেয় একা বা কয়েকজনের সাথে নেয়। কিন্তু আমি যখন অন্য একজন বা একাধিক মানুষের সাথে সম্পর্ক করছি তখন অনেকগুলো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করাই সমাধান?

মেহতাব খানম বলেন- না, বন্ধ করা সমাধান নয়। ‘সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে আমরা যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণের আগেই সব কিছু হাতের মুঠোয় চলে আসছে। দায়িত্বশীল ব্যবহার করতে পারছিনা এটির। ওখানে অজস্র টাইম দেওয়ার কারণে অন্য সব কিছুতে প্রভাব ফেলছে। আমার মাথা ওটাতেই ব্যস্ত থাকছে।’

স্ট্রেস কমাতে কি দরকার?

মেহতাব খানম বলেন এজন্য যথাযথ শিক্ষার দরকার। ‘অভিভাবকদেরও সচেতন দরকার। স্কুলগুলোতে প্যারেন্টিং কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/