ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘যে ভুল স্বীকার করে সেই উত্তম’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ১৮ মে ২০১৯ শনিবার

ক্ষমা বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় পাওয়া। সৃষ্টি জগতের প্রতিটি মানুষ ভুল করে। তবে, এরমধ্যে তারাই উত্তম যারা ভুল স্বীকার করে, ভুলের জন্য ক্ষমা চায় এবং দ্বিতীয়বার ভুল না করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

প্রভুর নিকট ক্ষমা পাওয়া তথা আল্লাহর নৈকট্য লাভে বাহিরের পবিত্রতার চেয়ে নফসের পবিত্রতা জরুরি।

যার অন্তরে পবিত্রতা নেই, হাজারো ওযু গোসল করেও তার কোন কাজ হবে না। আমাদের পবিত্রতা তখনি অর্জিত হবে, যখন আমরা সব অন্যায় থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের (সা.) সন্তুষ্টির জন্য সৎ পথে পরিচালিত হবো।

আর যদি অন্তরের পবিত্রতা অর্জন করতে চাই, তবে তওবাই একমাত্র উত্তমপন্থা। তওবার মাধ্যমে মানুষ স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করে। এ জন্য আল্লাহর কাছে হেদায়াতের উদ্দেশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা চাওয়ার মানসিকতা যার আছে, সেই কেবল প্রভুর আনুকূল্য পেতে পারে।

এ জন্য আল্লাহকে হাজির নাজির মেনে নিজেকে তার কাছে সপে দিতে হবে। হেদায়াতের উদ্দেশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।  আল্লাহ প্রত্যেকটি মানুষের গোপন ও প্রকাশ্য প্রতিটি পদক্ষেপের খবর রাখেন। কোন কিছুই তার অজানা নয়।

কোন বান্দা যদি তার সন্তুষ্টির জন্য এগিয়ে আসে, তিনি রহমতের হাত বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ যাকে চান হেদায়েত দান করেন। তবে, এ জন্য আমাদের মনকে হেদায়াত পাওয়ার উপযোগী করে তুলতে হবে।

হযরত আবু জর গিফারি সূত্রে রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ বলেন- হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই পথভ্রষ্ট একমাত্র সে ছাড়া, যাকে আমি নিজে পথের সন্ধান দিয়েছি। অতএব, তোমরা আমার কাছে হেদায়েত প্রার্থনা কর।

সূরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- যারা আমাকে ডাকে নিশ্চই আমি তাদের নিকটে। বান্দা যখন আমাকে ডাকে, আমি সে ডাকে সাড়া দেই। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি একান্ত চিত্তে আল্লাহকে স্বরণ করেন আল্লাহ তার প্রার্থনা কবুল করেন।

রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ বলেন- হে বান্দারা! আমি আমার ওপর জুলম করাকে হারাম বলে ঘোষণা করেছি। তোমরাও তোমাদের নফসের ওপর জুলুম করাকে হারাম করে দাও।

আল্লাহ আরও বলেন, তোমরা সবাই ক্ষুধার্ত, সে ছাড়া যাকে আমি আহার্য দেই। অর্থাৎ এখানে হালাল রুজির কথা বলা হয়েছে।

হালার রুজির বিনিময়ে যে খাদ্য অর্জিত হয়নি সে খাদ্য কোনদিন মানুষের ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে পারে না।

আল্লাহ বলেছেন- ওগো বান্দারা, তোমরা সবাই উলঙ্গ, একমাত্র সে ছাড়া যাকে যাকে আমি পরিচ্ছদ প্রদান করি। অর্থাৎ, এখানে সম্মানের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ যাকে সস্মান দেন, সে ছাড়া কেউই সম্মানিত নয়।


সবশেষ বলা হচ্ছে, হে আমার বান্দারা! তোমরা সকাল-সন্ধা গুনাহ করেই যাচ্ছ আর আমি মাফ করেই যাচ্ছি। তোমরা আমার কাছে মাফ চাও। মাফ চাইলেই আমি মাফ করে দেব।

হাদিসটি দীর্ঘ কিন্তু খুবই মর্মস্পর্শী। আল্লাহ মানুষের প্রতি কত মেহেরেবান এ থেকেই বোঝা যায়। আর তার রাসূলতো উম্মত বলতেই দিশেহারা।

এ জন্যেই রাসূলকে বলা হয়েছে হারিস বা লোভী। এটা উম্মতদের জন্য রাসূলের প্রেম। উম্মতের প্রেম যখন রাসূলে জন্য নিবেদিত হয় তখনই আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়। তাই বলি হেদায়েতের জন্য রাসূলের জন্য যদি কেউ নিবেদিত হয় তখনই আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়।

তাই বলি হেদায়েতের আয়নায় নিজেকে একবার দেখার চেষ্টা করি। তখনই আমরা দেখবো পবিত্রতার আলো জ্বলে উঠবে।

কারণ হেদায়েত যিনি দেবার মালিক তিনি তো হাত বাড়িয়েই আছেন। আমরা যদি হাত বাড়াই, দেখবো তিনি আমাদের বন্ধু হয়ে আছেন।

সূত্র: হযরত সৈয়দ রশীদ আহমদ জৌনপুরি’র (রহ) সংলাপ সমগ্র বই থেকে সংগৃহীত।

 

 

আই/ এসএইচ/