ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

নাকের পলিপ হলে যা করবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫০ পিএম, ২৬ মে ২০১৯ রবিবার

আমাদের নাকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। অনেক শুরুতে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নাকে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ দিয়ে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।

সাধারণত নাকের এক ধরনের বোটা থাকে। এটা দেখে অনেক নাকে পলিপ হয়েছে বলে ধারণা করে। তাদের এ ধারণা ভুল। পলিপ একটু নাকের গভীরে হয়ে থাকে। নাকের মধ্যে এক ধরনের মাংস পিণ্ডকে পলিপ বোঝানো হয়। এটি দুই ধরনের হতে পারে এবং দেখতে স্বচ্ছ।

নাকের এ রোগ ও তার চিকিৎসা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাক কান গলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার।

পলিপ কি?

ন্যাসাল পলিপ নাম দেখেই বোঝা যায় যে এটা নাকে হয়। পলিপ জিনিসটা আসলে একটা মাংসপিণ্ড। এটাকে মাংসপিণ্ড বলা হলেও আসলে এটা মাংসপিণ্ড নয়। ইংরেজিতে এটাকে বলা হয় ম্যাস। আসলে এটা নাকের ভেতরে হয় এবং দেখতে স্বচ্ছ, দেখতে অনেকটা সাদা রংয়ের আঙুরের থোকার মতো নাকের ভেতরে হয়ে থাকে। পলিপ দুই নাকেই হতে পারে।

সাধারণত পলিপ দুই ধরনের হয়ে থাকে ১. ইথময়েডাল পলিপ, যা উভয় নাসারন্ধ্রেই হয়ে থাকে। এই ধরনের পলিপ শিশুদের কম হয়।

২. অ্যান্ট্রোকোয়োনাল পলিপ, এটি শিশুদের বেলায় বেশি দেখা দেয়। দুই ধরনের পলিপ হওয়ার পেছনের কারণও ভিন্ন।

পলিপ হাওয়া প্রধান কারণগুলো কি কি?

সাধারণত পলিপ এলার্জির কারণে হয়ে থাকেন। যাদের হাঁছি থাকে, সর্দি থাকে, তাদের মূলত পলিপ বেশি দেখা দেই। হাপানি, চোখ চুলকানো নাখ চুলকানোর কারণে পলিপ দেখা দিতে পারে কিন্তু মূল এলার্জির কারণে দেখা দেয়। এছাড়া বিভিন্ন ইনফেকশনের কারণে পলিপ হতে পারে।

অপারেশন ছাড়া পলিপ চিকিৎসা সম্ভব কি না?

অপারেশন ছাড়া অবশ্যই পলিপ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তবে আগে পলিপ কোন অবস্থায় আছে সেটা দেখতে হবে। ধুলা-বালি,গরম এবং এলার্জির কারণের পলিপ হতে পারে। সে জন্য আগে পলিপ হওয়ার কারণ নির্মাণ করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। চিকিৎসক যে খাবারগুলো খেতে নিষেধ করে সেগুলো খাওয়া যাবে না। নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলে পলিপ ভাল হয়েই যেতে পারে।

দীর্ঘমেয়দী পলিপ হলে শিশুদের স্বাস্থ্যর ঝুঁকি আছে কি না?

অবশ্যই, দীর্ঘমেয়াদী পলিপ হলে শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এমন কি মৃত্যু পযর্ন্ত হতে পারে। বেশি আকার ধারণ করলে মেডিক্যাল চিকিৎসা সম্ভব নয়। তখন সেটাকে সার্জারি করতে হবে। মাঝে মাঝে নাত বন্ধ হয়ে যায়। রাতের বেলা দম বন্ধ হয়ে যায়। দিনের বেলায় বেশি ঘুমায়।দাঁতগুলো উচু হয়ে যায়। সারা সময় সর্দিভাব থাকে। নাকে কম শোনে। স্মৃতিশক্তি কমে যায়। পড়াশুনা মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। দিনে দিনে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি এক সময় শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

কারো যদি পলিপ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য কি করতে হবে?

পলিপ হয়ে থাকলে দেখতে হবে এটি প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে নাকি অনেক পরে মানে দেরি করে রোগী ডাক্তারের কাছে এসেছেন। প্রাথমিক অবস্থায় যদি খুব ছোট থাকে তাহলে আমরা অ্যান্টি অ্যালার্জিক ড্রাগ দেই এবং একই সাথে লোকাল অ্যাস্টেরয়েড স্প্রে হিসেবে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকি। তাতে অনেকসময় দেখা যায় ওই পলিপ ছোট হয়ে মিশে যায়।

আবার কখনও কখনও পলিপ চিকিৎসার জন্য স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য দিয়ে থাকি। আর সেটা ব্যবহারেও অনেক সময় পলিপ ছোট হয়ে যায়। আর যদি খুব পলিপ বেশি বড় হয়ে গিয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে বড় তা নাক থেকে দূর হয় না। সে সব ক্ষেত্রে অপারেশন করে পলিপ সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব। আর পলিপ অপারেশনের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন রকমের পদ্ধতি আছে।

এ রোগ এড়াতে আপনার পরামর্শ কি?

মূলত পলিপ থেকে মুক্ত থাকতে হলে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। যেহেতু এটার কারণ অ্যালার্জি সেহেতু অ্যালার্জির সৃষ্টির।