ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভূমধ্যসাগর থেকে বেঁচে আসা বিলালের শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩১ পিএম, ২৭ মে ২০১৯ সোমবার

অবৈধপথে ইতালি পাড়ি দিতে গিয়ে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় অনেকে মারা গেলেও ফিরে এসেছেন বিলাল আহমদের নামে এক যুবক। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মউদপুর গ্রামের মৃত তজম্মুল আলীর ছেলে বিলাল।

রোববার দুপুরে দেশে ফেরেন তিনি। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের টিকে-৭১২ ফ্লাইট যোগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেখানে ১ দিন বিভিন্ন সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অবশেষে শনিবার সকালে বাড়ি ফেরেন।

দেশে ফেরার পরও এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে পারছেন না বিলাল। চোখের সামনে ভেসে উঠছে সাগরে ডুবে যাওয়ার সেই ভয়াল দৃশ্য।

তার চোখের সামনেই আপন ভাগ্নে আহমদ হোসেন, দুই ভাতিজা আব্দুল আজিজ ও লিটন আহমেদ সাগরে ডুবে মারা যান।

ভাগ্যক্রমে ১১ ঘণ্টা সাগরের পানিতে ভেসে থেকে বেঁচে যান বিলাল। এই দুঃসহ স্মৃতি তাকে এখনো তাড়া করছে। ইচ্ছা করলেও তিনি স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারছেন না।

এই দুর্ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের আহমদ, লিটন ও আজিজসহ দেশের অন্তত ৩৯ জন সাগরে ডুবে মারা যান।

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়ার শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনা দিয়েছেন বিলাল আহমদ।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিলাল বলেন, ‘দালালচক্র ভারত, শ্রীলঙ্কা, কাতার হয়ে তাদের নিয়ে যায় লিবিয়ায়। লিবিয়ায় জিম্মি করে কয়েক মাস চলে নির্যাতন। পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশে ফিরে আসার পথও। অবশেষে প্রতিজনের পরিবারের কাছ থেকে চুক্তির ৮ লাখ টাকা আদায়ের পর আরও কয়েক লাখ টাকা আদায় করে ইতালির উদ্দেশ্যে তাদের তুলে দেয়া হয় রাবারের নৌকায়। অল্পদূরে গিয়েই ডুবে যায় তাদের বহনকারী নৌকাটি।

বিলাল কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, লিবিয়ায় আরো অন্তত ২শ বাংলাদেশি তরুণকে এই পথে ইতালি পাঠাতে জড়ো করে রেখেছে পাচারকারী চক্র। অতিরিক্ত টাকার জন্য চালাচ্ছে নির্যাতন। চুক্তি অনুযায়ী দালালরা কথা রাখেননি। তারা ইতালিতে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে আসলে লিবিয়ার দালালদের কাছে তাদের বিক্রি করছে।

বিলাল বলেন, ‘এখন দাবি একটাই। আর সেটি হচ্ছে এই দালাল চক্রের কঠোর শাস্তি।’ পাশাপাশি লোভে কেউ যেন দালালদের প্রতারণায় না পড়েন এই আহ্বানও তিনি।