ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৬ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

ইস্তফার সিদ্ধান্তে অনড় রাহুল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৫ পিএম, ২৭ মে ২০১৯ সোমবার

ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেস এর সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন রাহুল গান্ধী। তাঁর বিকল্পের সন্ধান করতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিকে জানিয়েছে দিয়েছেন তিনি। সেই সাথে বাতিল করা হয়েছে তাঁর রাজনৈতিক সকল কর্মকাণ্ড।

এমনকি, দলের নবনির্বাচিত সাংসদদের সঙ্গে দেখা করতেও রাজি হননি তিনি। দুই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল এবং কে সি বেণুগোপালের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দিষ্ট করে তাঁর ইস্তফার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।

দলের একটি শীর্ষ সূত্রে দাবি, তার বিকল্প নতুন নেতা খোঁজার জন্যও দুই নেতাকে রাহুল স্পষ্ট বলে দিয়েছেন।

ভারতীয় লোকসভা ভোটে চরম বিপর্যয়ের পর শনিবার দলের কার্যকরী কমিটির বৈঠকেই কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রাহুল। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটি তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি। বরং দলের দুঃসময়ে এবং লোকসভা ভোটে মোদি তথা বিজেপিকে তিনিই একমাত্র চাপে ফেলতে পেরেছেন বলে রাহুলকেই দলের সভাপতি পদে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন ওয়ার্কিং কমিটির নেতা-নেত্রীরা। এমনকি, সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কাও তাঁকে বুঝিয়ে তখনকার মতো নিরাশ হয়েছেন।

সেদিনের মতো বিষয়টি মিটে গেলেও পরে ফের কঠোর অবস্থান নেন রাহুল গান্ধী। এমন কী সোনিয়া-প্রিয়াঙ্কা দফায় দফায় বুঝিয়েও রাজি করাতে পারেননি এবং তাঁরাও শেষ পর্যন্ত রাহুলের সিদ্ধান্তেই সায় দিয়েছেন।

অসংখ্য নেতা-নেত্রী ফোনে বা দেখা করে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এই দুদিনে। কিন্তু দলের একাধিক সূত্রে খবর, রাহুল আর কোনভাবেই কংগ্রেস সভাপতির পদে ফিরতে রাজি হননি। কংগ্রেসের নবনির্বাচিত সাংসদরা তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ফোন করেছিলেন। কিন্তু রাহুল কারও সঙ্গেই সাক্ষাতে রাজি হননি। তাঁর সমস্ত অ্যাপয়েন্টমেন্ট, বৈঠক এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি সব কিছুই বাতিল করেছে দল। সেটাও যে রাহুলের নির্দেশেই হয়েছে।

রাহুলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর,পদ ছাড়ার ব্যাপারে আর কোনও দ্বিমতই নেই। তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শুধু নতুন কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন করা পর্যন্ত দায়িত্বভার সামলাবেন তিনি। সেই সময়টুকু দলকে দিতে সম্মত হয়েছেন। তবে এই সময়ের মধ্যেও দলের সাংগঠনিক বা অন্য কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নেবেন না বলেই সূ্ত্রের খবর।

রাহুলের এই অনমনীয় অবস্থান বুঝেই তলে তলে পরবর্তী পদক্ষেপও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি কে হবেন, তা নিয়েও দলের ভেতরে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, সিডব্লিউসির পরবর্তী বৈঠকেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাহুলের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করা হতে পারে।

অন্যদিকে শনিবারের কার্যকরী বৈঠকে ইস্তফার ঘোষণার পর এই প্রথম টুইট করেছেন রাহুল গান্ধী। সোমবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর মৃত্যু দিবসে শান্তিবনে গিয়ে তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান রাহুল। সাথে ছিলেন সোনিয়া গান্ধীও।

পাশাপাশি টুইটারেও শ্রদ্ধা জানিয়ে রাহুল লিখেছেন, ‘একটি শক্তিশালী, স্বাধীন এবং আধুনিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দেশকে শক্তিশালী করার জন্য তাঁর মৃত্যু দিবসে চলুন আমরা জওহরলাল নেহরুর অবদানকে স্বীকার করি। তাঁর সেই অবদানের জন্যই ভারতবর্ষে ৭০ বছর ধরে গণতন্ত্র জীবিত।’

(সূত্র:আনন্দবাজার পত্রিকা)

কেআই/