ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪,   বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

পাকিস্তানে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২১ এএম, ২৯ মে ২০১৯ বুধবার

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এক হিন্দু পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা বা ব্লাসফেমি আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইসলাম ধর্মের বাণী সম্বলিত একটি কাগজে মুড়িয়ে রোগীর কাছে ওষুধ বিক্রি করেছিলেন তিনি।

চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী তিনি যে কাগজটি ব্যবহার করেছিলেন, সেটি স্কুলের ইসলাম শিক্ষা বইয়ের একটি কাগজ ছিল।

ওষুধ মোড়ানোর কাজে কাগজটি ব্যবহার করা তার ভুল হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের শাস্তি দেওয়া হতে পারে।

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননা বা ব্লাসফেমি আইন অনুযায়ী, ইসলাম ধর্মকে অপমানকারী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে।

সমালোচকদের মতে, এই আইনে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘুদের অভিযুক্ত হওয়ার হার অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বেশি।

সেখান থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, স্কুলের ইসলাম শিক্ষা বইয়ের একটি পাতা দিয়ে মুড়িয়ে একজন গ্রাহককে তার গবাদি পশুর জন্য ওষুধ দেন ঐ চিকিৎসক। কিন্তু গ্রাহক ধর্মীয় লেখা দেখে সে প্যাকেটটি নিয়ে স্থানীয় ধর্মীয় নেতার কাছে গেলে তিনি পুলিশকে খবর দেন।

রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলেমা-এ-ইসলামী’র একজন স্থানীয় নেতা হাফিজ-উর-রেহমান বিবিসিকে বলেন, চিকিৎক এই কাজটি ইচ্ছা করে করেছে।

তবে পুলিশ বলেছে, ওই চিকিৎসক এই কাজ ভুলবশত করেছে বলে তাদের জানিয়েছে।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা এবং কোরাআন অবমাননার দায়ে সে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়, যা প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর চিকিৎসকের ক্লিনিকসহ চারটি স্থানীয় দোকান লুট করার পর সেখানে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে।

মিরপুর খাস এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা জাভেদ ইকবাল বিবিসিকে বলেছেন, যারা দোকানে আগুন দেয়া এবং লুটের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

ইসলাম পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম এবং সেখানকার জনগণের মধ্যে কঠোর ব্লাসফেমি আইনের সমর্থন ব্যাপক।

সংবাদদাতাদের মতে, সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বজায় রাখতে কট্টরপন্থী রাজনীতিবিদরা এই আইনের কঠোর শাস্তিগুলোকে অনেক সময়ই সমর্থন দিয়েছেন।

গত কয়েক দশকে কয়েক’শ পাকিস্তানি নাগরিককে এই কঠোর ব্লাসফেমি আইনের অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ব্যাপক সমালোচিত হয়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/