ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যে কারণে মোদির শপথে যাচ্ছেন না মমতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৫ এএম, ৩০ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১০:৫১ এএম, ৩০ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে জয়ী নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে প্রথমে যোগ দেয়ার কথা জানালেও পরে তা বাতিল করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি।

বুধবার ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে এক টুইটে অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান মমতা ব্যানার্জি।

টুইটে মমতা অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণের মতো একটি অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে একটি দল। মঙ্গলবার রাতে মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- গত ছয় বছরে পশ্চিমবঙ্গে খুন হওয়া বিজেপি কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে ‘বিশেষ আমন্ত্রিত’ হিসেবে রাখা হবে।

বুধবার এ খবর জানার পর শপথ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানান মমতা।

এক টুইটে তিনি বলেন, ‘অভিনন্দন, নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জি। আমার পরিকল্পনা ছিল ‘সাংবিধানিক আমন্ত্রণ’ গ্রহণ করা এবং শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা। যাই হোক, গত এক ঘণ্টায়, আমি গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখছিলাম যে বিজেপি দাবি করেছে বাংলায় রাজনৈতিক সহিংসতায় ৫৪ জন নিহত হয়েছেন। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাংলায় কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। ওই সব হত্যাকাণ্ড ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক দ্বন্দ্ব বা অন্য কোনো বিরোধের কারণে হয়ে থাকতে পারে। এর কোনোটির সঙ্গেই রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’

এরপর তিনি লেখেন, ‘তাই, আমি দুঃখিত, নরেন্দ্র মোদি জি, অনুষ্ঠানে না থাকতে এটি আমাকে বাধ্য করল।’

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণাকালে মোদির সঙ্গে মমতার তীব্র কথার লড়াই হয়েছিল। এ লড়াইয়ে কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি। নির্বাচনের পর দিল্লিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের নির্বাচিত লোকসভা সদস্যদের প্রথম বৈঠকে মোদি জানিয়েছিলেন, প্রচারে কে কী বলেছিলেন সেগুলো মনে না রেখে সবাইকে নিয়ে উন্নয়নের পথে হাঁটতে চান তিনি। মোদির ওই আহ্বানের প্রতি সৌজন্য দেখিয়ে ও রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মমতা।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ‘খুন হওয়া’ ৫৪ জন বিজেপি কর্মীর পরিবারকে শপথ অনুষ্ঠানে রাখার বিজেপির পরিকল্পনার কারণেই মমতার সিদ্ধান্ত বদল বলে বলছে ভারতীয় গণমাধ্যম। নিজের টুইটে তিনি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বলেও মন্তব্য আনন্দবাজার পত্রিকার।

পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত বিজেপির ৫৪ জন কর্মী ও সমর্থক খুন হয়েছেন বলে দাবি ভারতের ক্ষমতাসীন দলটির। তাদের পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে শপথ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যাবেন রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিং সহ আরও অনেকে।

প্রসঙ্গত, ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার শপথ নিতে যাচ্ছেন।

সন্ধ্যা ৭টায় রাইসিনা হিলসে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাকে শপথ পাঠ করাবেন। তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও শপথ নেবে।

১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস ধরে সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ মে একযোগে ফল ঘোষণা করা হয়।

এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট ৩৫৩টি আসন। সরকার গঠনের জন্য ৫৪২ আসনের মধ্যে ২৭২টি আসন পেলেই যথেষ্ট ছিল বিজেপির। সেখানে বিজেপি এককভাবে বিজেপি ৩০৩টি আসন পেয়েছে। এ জয়ের মধ্য দিয়ে মোদির ‘আব কি বার ৩০০ পার’ স্লোগানই সত্য হয়।