ঢাকা, শনিবার   ১৮ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

অমিতের জন্য বড় পরীক্ষা জম্মু-কাশ্মীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৯ এএম, ১ জুন ২০১৯ শনিবার

সদ্য সমাপ্ত  ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভের পর টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদি। এ সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন অমিত অনিল চন্দ্র শাহ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। এছাড়াও মোদি সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের বিষয়েও পদক্ষেপ নিতে চাইছে।

অদূর ভবিষ্যতে তা রূপায়ণের গুরুদায়িত্বও এসে পড়তে চলেছে অমিতের উপরে। সঙ্গে রয়েছে জঙ্গি সমস্যা মেটানো। সব মিলিয়ে জম্মু-কাশ্মীরই নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বড় পরীক্ষা হতে চলেছে বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্র বিশেষজ্ঞরা।

গত জুনে কাশ্মীরে পিডিপি ও বিজেপি সরকারের জোট ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই প্রথমে রাজ্যপালের শাসন ও ছ’মাসের পর থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত বিধানসভা নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করেছেন খোদ রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। উপত্যকায় দ্রুত নির্বাচন করানোর পক্ষে ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের কমিটি।

এবারের লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার সময়েই জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচনী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ওই কমিটি নিয়োগ করা হয়েছিল। কমিশনের কাছে জমা দেওয়া তাদের রিপোর্টে শিগগিরই নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করেছে কমিটি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, জুনের তৃতীয় সপ্তাহ অর্থাৎ বর্ষা আসার আগে, না-হলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন পর্ব মিটিয়ে ফেলা যেতে পারে।

বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বৈঠকে বসেন কমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তারা। তাতে জুন বা জুলাইয়ে নির্বাচন করার সুপারিশ খারিজ করে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কর্তাদের বক্তব্য, একে রমজান মাস চলছে, উপরন্তু সামনেই অমরনাথ যাত্রা। যাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে বিপুল সংখ্যক আধাসেনার প্রয়োজন। ফলে ওই সময়ে কোনোভাবেই উপত্যকায় ভোট করা সম্ভব নয়।

তবে সেপ্টেম্বরে ভোট করতে প্রাথমিকভাবে আপত্তি নেই কেন্দ্রের। একই সঙ্গে বিকল্প সময় হিসেবে দিওয়ালির শেষে অর্থাৎ নভেম্বরের শুরুতে ভোট করানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে কমিশনকে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, নতুন মন্ত্রীর মতো স্বরাষ্ট্র সচিবেরও আগামী সপ্তাহে দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে। তার পরেই নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠতে পারে।

জঙ্গি দমন প্রশ্নে, বিশেষ করে উপত্যকার ক্ষেত্রে সরকারের নীতি কী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে মন্ত্রণালয়ের ভেতরে। গত সরকারের আমলে জঙ্গি রুখতে কড়া নীতি নিয়েছিলেন মোদি। এতে জঙ্গিদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও উপত্যকা শান্ত হওয়ার পরিবর্তে আরও উত্তপ্ত হয়েছে।

প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গুলির পরিবর্তে আলোচনার উপরে জোর দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু অমিত শাহ জঙ্গি দমন প্রশ্নে চরিত্রগতভাবে রাজনাথের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করেন।

দলীয় নেতাদের অনেকে এমনও বলছেন, কাশ্মীরের বিষয়ে ‘দ্বিতীয় বল্লভভাই পটেল’ হতে চাইছেন অমিত শাহ। ফলে জঙ্গি দমন প্রশ্নে সরকার এবার আরও কড়া অবস্থান নিতে পারে বলেই মনে করছেন স্বরাষ্ট্র কর্তারা।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

এমএইচ/