ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ভোক্তা অধিকার রক্ষায় কাজ করবো: শাহরিয়ার

আজাদুল ইসলাম আদনান

প্রকাশিত : ০৭:৪৩ পিএম, ৪ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:৪৬ পিএম, ৪ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার

মনজুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার। নামটি এখন অনেকের মুখেমুখে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সোমবার রাজধানীর উত্তরায় আড়ংয়ের একটি আউটলকে তার নেতৃত্বে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

অভিযানে পাঁচ দিনের ব্যবধানে কাপড়ের মূল্য প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রির অভিযোগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা ও ২৪ ঘণ্টা বন্ধের ঘোষণা দেন ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার। যদিও, নিজেদের ভুল স্বীকার করায় পরে খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

অভিযানের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বদলির প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে জনপ্রশাসন। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা, নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই আড়ং বর্জনের ডাক দেয়।

পরে সমালোচনারমুখে বদলির আদেশের ১২ ঘণ্টার মাথায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বপদে বহাল রেখে মঙ্গললবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে একুশে টিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার।

প্রথমে বদলি পরে পুনরায় স্বপদে বহালের বিষয়ে মনজুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার বলেন, আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, বদলি আমাদের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিষয়টি যেহতু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দেখছেন, তখন এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই। প্রধানমন্ত্রীও চান ভোক্তা সাধারণের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চত হোক। তাই, সাধারণ মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চতে আমরা বদ্ধ পরিকর।

কাজের ক্ষেত্রে নতুন করে বাধারমুখে পড়তে হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাজই হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে কাজ করা। এ জন্য আমাদের যা করার তা আমরা করবো। এক্ষেত্রে চাপের কিছু নেই।

রমজানের পর ভেজাল বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, যেসব মানহীন পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত, তার অধিকাংশই ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে।

রমজানের পর কোনভাবেই পণ্যগুলোর বাজারে প্রবেশের সুযোগ নেই। যে প্রতিষ্ঠানই আসুক, মান যাচাই-বাছাই করেই তাকে আসতে হবে বলে জানান এ ম্যাজিস্ট্রেট।  

এছাড়া তিনি বলেন, রমজানে রাজধানীজুড়ে প্রতিদিন ৪টি টিম ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। এমনকি ছুটির দিনেও আমরা এসব অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের কাজের সিস্টেমেটিক কিছু পরিবর্তন দরকার। তাহলে কাজের গতি বাড়বে, ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

খুব শিগগিরই সে পরিবর্তন হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।

গত একমাসে আড়ং এর মত নামীদামী অনেক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় সংস্থাটি। এর মধ্যে অসাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি দায়ে মিরপুরের সিটিমহল থাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টন, নিউ ক্যাফে রেস্তোরা, ধানমন্ডি রেস্টুরেন্ট, গোল্ডেন সান হোটেল, মায়ের দোয়া, পূর্ণিমা লাইলতি, সুচিলি রয়েছে ওয়েল ফুডের মতো নামীদামী রেস্টুরেন্ট।

ফ্রিজে পচা মাংস ও মেয়াদত্তীর্ণ মাংস রাখার অভিযোগে স্বপ্ন, আগোরা, প্রিন্স এর মত প্রতিষ্ঠানেও চালানো হয় অভিযান।

বিদেশি পণ্য আমদানিকারকের নাম না থাকায় সটার ওয়ার্ল্ড, ল্যান্ডিং, ওয়েস্টার্ন গ্লামার, স্টার ডাস্ট, এনওয়াইসি, স্টোন গ্যালারি, নিউ ইয়ার কালেকশন, মাদারস কেয়ার, দাইয়োত এর মত নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করা হয় কয়েক কোটি টাকা।  

মেয়াদুত্তীর্ণ পণ্য ব্যবহার করায় গুলশানের পারসোনা ও ধানমন্ডির ফারজানা শাকিলস মেকওভার সেলুনকে ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

আর ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়ার নেওয়ার অভিযোগে হানিফ, এনা, শ্যামলি পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

আই// এসএইচ/