ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঈদের দ্বিতীয় দিনে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর ঢল (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:১৭ পিএম, ৬ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১০:২৭ পিএম, ৬ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদের সেই আনন্দ-খুশি ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। ঈদের দ্বিতীয় দিনেও তাই মিরপুর চিড়িয়াখানায় দেখা গেছে দর্শনার্থীর ঢল। দিনভর ভ্যাপসা গরম থাকলেও তা দর্শকদের ঈদ আনন্দ উপভোগে বাধা হতে পারেনি। বানর, বাঘ, সিংহ, হরিণ কিংবা ময়ূরের খাঁচার সামনে আনন্দ উপভোগ করেন সব বয়সী মানুষ।

বৃহস্পতিবার চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা গেল দর্শনার্থীরা বিভিন্ন খাচায় রাখা পশুগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এক খাচা থেকে অপর খাচায় হেঁটে হেঁটে দেখছেন তারা। শিশুরা সিংহের খাচার সামনে ভীড় করছেন। পশুর রাজা সিংহকে দেখে শিশুর ছোট্ট মনে একদিকে ভয় অন্যদিকে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের হিল্লোড়।

শুধু সিংহ না বাঘ মামাকে দেখেও শিশুরা আনন্দিত। এতোদিন যে মামাকে বইয়ের পাতায় পড়েছে বনের রাজা বাঘ মামা। সেই রাজাকে শিশুরা আজ দেখছেন খুব কাছ থেকেই। তবে বাঘ মামাকে একটু রাগাতে চেষ্টা করছেন অনেক শিশু। কিন্তু বাঘ মামা তো কোন গর্জন দিচ্ছে না। তাই অনেক অবিভাবককে তার শিশু সন্তানকে বুঝাতে হচ্ছে বাঘ মামা আজ অসুস্থ তাই চুপ করে আছে। চলো আমরা এবার বানর দেখি।

তবে বানরের খাঁচার সামনে এসে পয়সা উসুল দর্শনার্থীদের। বানরের বাঁদরামো, ভেংচি কাটা, আর লাফালাফি শিশুরা তো বটেই প্রাণভরে উপভোগ করেন অভিভাবকরাও। এর বাইরে ভাল্লুক, জিরাফ, হাতি, হরিণ, ময়ূরসহ চিড়িয়াখানার সবগুলো খাঁচার সামনেই ছিলো দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী ঈদের দিন দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার। ঈদের দ্বিতীয় দিন এ সংখ্যা আরো ৫ গুণ বেড়ে যেতে পারে। ভিড় বেশি হলেও ঝামেলা ছাড়াই চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখছেন সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর বনশ্রী থেকে বাবা মায়ে সঙ্গে চিড়িয়াখানায় এসেছে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া রিফাত হোসেন সৈকত। কেমন লাগছে চিড়িয়াখানা ঘুরে এমন প্রশ্নে সৈকত বলেন, অনেক অনেক মজা (আনন্দ) করছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখবো। কিন্তু বাঘ মামাটা অনেক বোকা। কোন কথায় বলে না। শুধু ঘুমাই।

একইভাবে রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে দুই মেয়ে নিয়ে এসেছেন হারমত ব্যাপারী। তিনি জানান, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করছেন তিনি। বেলা সাড়ে ১২টায় এসেছেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজের পেশার কারণে সবাইকে ঠিকভাবে সময় দিতে পারি না সব সময়। গতকালই আমাদের বের হবার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। তাই সকালে আকাশ পরিষ্কার থাকায় আর দেরি করিনি। সবাইকে নিয়ে চলে এসেছি। মূলত সন্তানদের বায়না মেটাতেই এখানে আসা। তারা আহসান মঞ্জিল ও লালবাগ কেল্লা অনেক দেখেছে, সেখানে আর যাবে না। চিড়িয়াখানা দেখবে। কী আর করা, বুঝতেই তো পারছেন। ওরাই তো আমার পৃথিবী।

চিড়িয়াখানায় মিরপুর ১০ থেকে এসেছে সরকারি চাকরিজীবি রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি অনেকবার এই চিড়িয়া খানায় এসেছি। প্রতিবার-ই বাঁচ্চাদের আবদার পূরণ করতে আসি। বাসার কাছাকাছি হওয়ার কারণে এ বিনোদন কেন্দ্র আসি। তবে এখানে গত কয়েক বছর ধরে কোন পরিবর্তন নেই। নতুন কোন পশু নেই। আবার আগের অনেক পশুও বিলীন হয়ে গেছে। নতুনত্ব না থাকায় দর্শনার্থীদের চিড়িয়াখানা দর্শন অনেকটা আনন্দহীন হয়ে পড়ছে।

আরকে//