সুদানে সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত শতাধিক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:১২ পিএম, ৬ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:২২ পিএম, ৬ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার
সুদানের রাজধানী খার্তুমে সামরিক বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে অন্তোত শতাধিক সুদানি নিহত হয়েছেন।
দেশটির সামরিক বাহিনীর সদর দফতরের সামনে অবস্থানরত নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর ট্রানজিশনাল মিলিটারি কাউন্সিল (টিএমসি) বাহিনীর হামলায় এ ঘটনা ঘটে।
দ্যা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদরদফতরের সামনে বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক বাহিনীর ওই হামলার পর পাশের নীল নদ থেকে ৪০টি লাশ উদ্ধারের দাবি করেছে বিক্ষোভরত বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। নিহতরা সবাই বিরোধী দলের বলে দাবি করেছে সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদান ডক্টরস (সিসিএসডি)।
গত সোমবার খার্তুমে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে ওই হামলার পর বুধবার রাতে সিসিএসডি এ খবর জানায়। এর আগে হামলায় ৬০ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০০ জনে।
দীর্ঘদিন থেকে দারিদ্র্যতায় পিষ্ট সুদানে গত বছর থেকে তেল ও রুটির দাম বাড়ানোয় দেশটির প্রেসিডেন্ট বশির আল ওমরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে বিরোধীরা ও সাধারণ মানুষ।
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ওমর। এতে করে সামরিক বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মাঝে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে, বিক্ষোভকারীদের এ আন্দোলন রুপ নেয় সরকার পতনের ডাক হিসেবে।
গত ৬ এপ্রিল থেকে খার্তুমে সামরিক বাহিনীর সদর দফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
এসব ঘটনার জেরে ১১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট বশিরের পদত্যাগ ঘোষণা করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এতে আনন্দে মেতে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সে আনন্দ ছিল কিছু মুহূর্তের মাত্র। কারণ বশিরের পদত্যাগের পর ক্ষমতা নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী।
পরে সামরিক বাহিনীকে বশিরেরই অংশ হিসেবে দাবি করে ফের বিক্ষোভ করতে থাকে আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, ব্যাপক আন্দোলনের মুখে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে, আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে বিক্ষোভকারীরা।
তারা বলছেন, ওই প্রস্তাব আন্তরিক নয় কারণ নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ সপ্তাহেই তাদের অতর্কিত হামলায় অন্তত ৬০জন নিহত হয় বলে জানায় তারা।
সুদানের প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র মোহাম্মদ ইউসেফ আল মোস্তাফা বুধবার বলেছেন, জেনারেল আব্দুল ফাতাহ বোরহান আলোচনার যে আহ্বান জানিয়েছেন তা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার মত নয়। কারণ, তার অধীনস্থ সেনারা সুদানী জনগনকে হত্যা করেছে এবং এখনও করছে।
১৯৮৯ সালে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থাকাকালে ওমর আল-বশির ‘অভ্যুত্থান’ ঘটিয়ে তৎকালীন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল-মাহদীকে উৎখাত করেন। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেন তিনি।
সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান
আই//