ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান খুঁজতে শুরু হলো কৃষিশুমারি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:১১ পিএম, ৯ জুন ২০১৯ রবিবার

দেশের জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান ঠিক কতটুকু তা সঠিকভাবে নিরুপণের জন্য আজ থেকে শুরু হলো কৃষি শুমারি। গ্রাম-শহর তথা মাঠপর্যায়ের এ তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে ২০ জুন পর্যন্ত। কৃষিশুমারি-২০১৯ কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে আজ রাজধানীর আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবন থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের নেতৃত্বে একটি র‌্যালি বের করা হয়। এছাড়া শুমারি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন।

এবারের শুমারিতে সারা দেশে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের পর্যায়ক্রমিক পরিসংখ্যান যেমন উঠে আসবে, তেমনি কৃষি খাতের কাঠামোগত পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্যও জানা যাবে। অতীতে কৃষিশুমারিতে শুধু অস্থায়ী ফসলের হিসাব নেয়া হতো। এবার অস্থায়ী ফসলের পাশাপাশি স্থায়ী ফসলের যেমন বনজ ও ফলজ বৃক্ষ ও এর উৎপাদন সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংগ্রহ করা হবে।

বিবিএস জানায়, শুমারি পরিচালনার মাধ্যমে ভূমির ব্যবহার, চাষযোগ্য জমির প্রকার ও ফসলের বৈচিত্র্য, কৃষি উপকরণ, সেচ যন্ত্রপাতি সম্পর্কিত পরিসংখ্যান, কৃষি বিষয়ক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে উপাত্ত সরবরাহ, কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এছাড়া জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান নির্ণয় এবং কৃষি খানা ও প্রতিষ্ঠানের রেজিস্টার তৈরি করা হবে।

সূত্র জানায়, ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো নমুনা আকারে কৃষিশুমারি করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষিশুমারি হয়। এরপর ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর, ১৯৯৬ এবং ২০০৮ সালে কৃষিশুমারি হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে কৃষিশুমারি করা হচ্ছে। এতে পল্লী এলাকায় গড়ে ২৪০টি খানা (পরিবার), পৌরসভা এলাকায় গড়ে ৩০০টি খানা এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গড়ে ৩৫০ খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি গণনা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয় গণনাকারী নিয়োগ করা হয়েছে। এভাবে সারা দেশে ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন গণনাকারী কাজ করবেন। তাদের কাজ পরিদর্শনের জন্য স্থানীয়ভাবে ২৩ হাজার ১৬৫ সুপারভাইজার কাজ করবেন। এছাড়া শুমারি কাজের সুবিধার্থে ৬৪টি জেলাকে ৯০টি শুমারি এলাকায় ভাগ করে বিবিএসের ৯০ কর্মকর্তাকে জেলা শুমারি সমন্বয়কারী এবং আটটি বিভাগকে ১০টি শুমারি বিভাগে ভাগ করে বিবিএসের ১০ জন কর্মকর্তাকে বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী একজন এবং প্রধান শুমারি সমন্বয়কারী একজন দায়িত্ব পালন করবেন।

সূত্র আরও জানায়, কৃষিশুমারির প্রস্তুতি হিসেবে ইতিমধ্যে দ্বিতীয় জোনাল অপারেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে জোনের গঠন ও জোনাল অফিসারের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া জিও-কোড তালিকা, মৌজা ও মহল্লা ম্যাপ যাচাই করে হালনাগাদকরণ, গণনা এলাকা নির্ধারণ ও ম্যাপে তা যাচাই-বাছাই করে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও অনেক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এর আগে প্রথম জোনাল অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে কোনো ভুলত্রুটি আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে জোনাল অপারেশন করা হয়। শুমারির উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮’ নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। এটি বাস্তবায়নে ৩৪৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।

কৃষিশুমারি দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষিশুমারির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮, রূপকল্প-২০২১, পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-২০৩০ প্রভৃতি অর্জন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নে কৃষিশুমারি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শনিবার এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

আরকে//