ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নিউজিল্যান্ডের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪২ এএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:০৯ এএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এই জয় পায় নিউজিল্যান্ড। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে আবারও শীর্ষে উঠে গেল কিউইরা।

তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটের পরাজয়ে এবারের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা অনিশ্চিত হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার।

বুধবার ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে আগে ব্যাট করে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২৪১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭ ও ৫৫ রান করেন রিশি ভেন দার ডুসেন ও হাশিম আমলা।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ওভারের ৩ বল হাতে রেখে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। দলের জয়ে অনবদ্য ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়েই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলতে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড। দলের জয়ে ১৩৮ বলে ৯টি চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ১০৬ রান করেন উইলিয়ামসন।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় মাত্র ১২ রানে কলিন মুনরোর উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কাগিসো রাবাদার গতির বলে স্ট্যাম্প উড়ে যায় মুনরোর। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন মার্টিন গাপটিল। এক উইকেটে ৭২ রান সংগ্রহ করা নিউজিল্যান্ড এরপর দিশেহারা হয়ে যায়। মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে হারায় ৩ ব্যাটসম্যানের উইকেট।

৫৯ বলে ৩৫ রান করা কিউই ওপেনার গাপটিলকে সাজঘরে ফেরান অ্যান্ডিল ফেহালুকাওয়ে। এরপর জোড়া আঘাত হানেন ক্রিস মরিস। তার গতির মুখে পড়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন রস টেইলর ও টম লাথাম।

দলীয় ৮০ রানে ৪ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর জেমস নিশামের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামসন। ৩৪ বলে ২৩ রান করে ক্রিস মরিসের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন নিশাম।

এরপর ষষ্ঠ উইকেটে ডি গ্রান্ডহোমের সঙ্গে কার্যকরী ৯১ রানের ‍জুটি গড়েন উইলিয়ামসন। তাদের এই জুটিতেই জয়ের দুয়ার চলে যায় নিউজিল্যান্ড। জয়ের জন্য শেষ দিকে ১১ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৪ রান। খেলার এমন সময় লুঙ্গি এনডিগির বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন গ্রান্ডহোম। ৪৭ বলে পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কায় ৬০ রান করে ফেরেন তিনি।

গ্রান্ডহোমের বিদায়ের পর কঠিন চাপের মধ্যে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। লুঙ্গি এনডিগির করা ওভারের পরের চার বলে মাত্র ২ রান সংগ্রহ করেন উইলিয়ামসন ও মিসেল স্যান্টনার। ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকান উইলিয়ামসন।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৮ রান। আন্দ্রে ফেহালুকাওয়ের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন স্যান্টনার। ঠিক পরের দুই বলে ছয় ও চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

বুধবার ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামার আগে বৃষ্টির বাগড়ায় পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টি ভেজা ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৯ রানে ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন কুইন্টন ডি কক।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন আমলা। ৩৫ বলে ২৩ রান করে লুকি ফার্গুনসনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস।

ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মধ্যে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যান আমলা। তবে ফিফটির পর নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি। মিসেল স্ট্যান্টনারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন আমলা। তার আগে ৮৩ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৫৫ রান করেন তিনি। এই রান করার পথে ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিতীয় দ্রুততম (১৭৬ ম্যাচ) ৮ হাজার রান সংগ্রহ করেন আমলা। দক্ষিণ আফ্রিকান চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

আমলার বিদায়ের পর দ্রুত আউট হন অ্যাডাম মার্কওরাম। তিনি ৫৫ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন। তবে রিশি ভ্যান দার ডুসেনের অপরাজিত ৬৪ বলে তিনটি ছক্বা ও দুটি চারে গড়া ৬৭ রানের ইনিংসে ভর করে ২৪১ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়া ৩৭ বরে ৩৬ রান করেন ডেভিড মিলার। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন লুকি ফার্গুনসন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৯ ওভারে ২৪১/৬ (ডুসেন ৬৭, আমলা ৫৫, মার্কওরাম ৩৮, মিলার ৩৭, ডু প্লেসিস ২৩; ফার্গুনসন ৩/৫৯)।

নিউজিল্যান্ড: ৪৮.৩ ওভারে ২৪৫/৬ (উইলিয়ামসন ১০৬, গ্রান্ডহোম ৬০,গাপটিল ৩৫,জেমস নিশাম ২৩; ক্রিস মরিস ৩/৪৯)।

ফল: নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী।