ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

অযথা আবেগ দেখিয়ে টাইগারদের আক্রমণ করবেন না

আতাউর রহমান

প্রকাশিত : ০৪:২৮ পিএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:২৯ পিএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ক্রিকেট আমাদের আবেগের জায়গা। ১৬ কোটি মানুষের ঐক্যমত্যের একমাত্র ক্ষেত্র। এই জায়গাটা নষ্ট হোক তা নিশ্চয়ই আমরা চাইব না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে অহেতুক আবেগ দিয়ে মাশরাফি-সাকিবদের ওপর প্রত্যাশার চাপ তৈরি করা ঠিক হচ্ছে না। সংবাদ কর্মীদের অনুরোধ করবো এমন আবহ তৈরি করবেন না যাতে টাইগাররা চাপে পিষ্ট হয়ে যায়। তাদেরকে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে দিন।

মনে রাখতে হবে, অস্ট্রেলিয়া পেশাদার টিম এবং এবারের বিশ্বকাপে হট ফেভারিট তিন দলের একটি অসিরা। যাদের পারফরমেন্সেও ধারাবাহিকতা রয়েছে। তাই তাদের হারানোটা মামুলি ব্যাপার না।

আমি বিশ্বাস করি মাশরাফি ও সাকিবরা স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারলে জয় আজ আমাদেরই হবে। আজ না জিততে (আল্লাহ না করুক) পারলে ফালতু আবেগ দিয়ে টাইগারদের আক্রমন করাটা ঠিক হবে না। আজ জিতলে যেমন সবচেয়ে খুশি হবো তেমনি হারলেও স্বাভাবিক থাকবো।

এমনকি আগামী ম্যাচগুলোর কোনোটিতেও যদি বাংলাদেশ না জিতে আমার কোনো আক্ষেপ থাকবে না। কারণ ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে যে খেলা সাকিবরা দেখিয়েছে তাতে আমি তৃপ্ত।

বাংলাদেশ দলে কমিটমেন্টের ঘাটতি আছে এমন ক্রিকেটার আমার চোখে পড়ে না। যে পাচ্ছে সেই কিন্তু কড়ান গণ্ডায় লুফে নিচ্ছে, পারফর্ম করছে। লিটন দাস গতম্যাচে কী খেলাটাই না খেলল। এর আগের সিরিজে সাব্বির রহমানকে যখন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরানো হলো দুইটা বড় ইনিংস খেলল সে। আবার সাইফউদ্দিন দলে জায়গা পেয়ে এমন পারফর্ম করল যে, রুবেলের মতো একজন পরীক্ষিত সিমারকে দলের বাইরে রাখতে হয়েছে নির্বাচকদের।

একটু পেছনে ফিরে তাকান গত বিশ্বকাপে রুবেলকে সুযোগ দেয়া নিয়ে কত সমালোচনাই না হয়েছিল। পরে রুবেল এমন পারফর্ম করলেন যা আমাদের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গেল। দলে যেই জায়গা পাচ্ছে নিজেকে মেলে ধরছে। দেশপ্রেম ও কমিটমেন্ট না থাকলে কোনো খেলোয়ারের পক্ষে এমনটা করা সম্ভব নয়। যে যাই বলুক আমি বাংলাদেশ দল নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী। তবে আবেগী নই, প্রত্যাশার চাপে ক্রিকেটারদের গতি নষ্ট করার পক্ষে নই।

একসময় বাংলাদেশকে দেখতাম উইকেট পড়া শুরু হলে আর কেউ দাঁড়াতেই পারত না। এখন দেখেন তো চিত্রটা। কেউ না কেউ দায়িত্ব নিয়ে নেয়। এগুলো আমাকে বেশ আনন্দ দেয়।

গত দু’তিন বছরে টাইগারদের খেলায় গুণগত যে পরিবর্তন ও পেশাদারিত্ব এসেছে এতে আমি খুশি। ব্যাটিং গভীরতায় বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে আমরা এগিয়ে, একাদশে প্রায় ১০ জনই ব্যাট করতে পারেন। আমাদের দলের মতো এত বেশি অলরাউন্ডার কোন দেশে আছে আমার তা জানা নেই। যা একটু দুর্বলতা বোলিংয়ে, সেটি কেটে যাবে। এসব আমাদের বহুদূর নিয়ে যাবে।

লেখক: সাংবাদিক।