ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাংলাদেশের সেমিতে যাওয়ার সহজ সমীকরণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৫৮ পিএম, ২২ জুন ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৭:১৯ পিএম, ২২ জুন ২০১৯ শনিবার

আসরে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শীর্ষ চারে ওঠার লড়াইটা বাংলাদেশের জন্য একটু কঠিন হয়ে দাঁড়ালেও গতকালকের ম্যাচে লঙ্কানদের কাছে স্বাগতিকদের হারে সে পথ কিছুটা সহজ হয়ে গেছে টাইগারদের জন্য।

বৃহস্পতিবার অজিদের সঙ্গে রেকর্ডময় ম্যাচে ৪৮ রানে হেরে যায় টাইগাররা। এর ফলে সেমিফাইনালে ওঠার পথটা নতুন করে কঠিন হয়ে দাঁড়ায় মাশরাফিদের জন্য।

তবে শুক্রবার শ্রীলংকার কাছে আসরের অন্যতম শিরোপার দাবিদার স্বাগতিক ইংলিশদের অসহায় আত্মসমর্পণে নতুন করে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

স্বাগতিকদের এ হারে বাংলাদেশের সম্ভাবনার পাশাপাশি আসর থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে মর্গানদের। কেননা, তাদের সামনে রয়েছে আসরের সবচেয় তিন হট ফেভারিট বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, সাবেক চ্যাম্পিয়ন ভারত আর নিউজিল্যান্ড। যাদের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা বেশ কঠিনই হবে ইংলিশদের জন্য।

তবে শীর্ষ চারে উঠতে হলে বাংলাদেশের নিজেদের পারফর্মেন্সের পাশাপাশি তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদলগুলোর দিকেও।
বাংলাদেশের সামনে এখনো তিনটি ম্যাচ রয়েছে। সেমিফাইনালের স্বপ্নে পা রাখতে হলে তিন ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। একটিতে হারলেই ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

আগামী ২৪ জুন আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। অন্য দুই প্রতিপক্ষ হলো দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত এবং পাকিস্তান। এই তিন দলের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প কিছু নেই মাশরাফিদের সামনে।

আর যদি দুটিতে জয় পায়, তারপরও সম্ভাবনা থাকবে টাইগারদের। কিন্তু সেটা অনেক কম। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৯।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৬টি ম্যাচ খেলেছে। দুটিতে জয়, তিনটিতে পরাজয় আর একটিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করায় ৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নস্বরে আছে মাশরাফিরা।

টাইগারদের সামনে রয়েছে সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে দুই জয় ও পরাজয় এবং দুটিতে পরিত্যক্তের দুই পয়েন্ট পাওয়া মালিঙ্গারা। সেমিতে ওঠার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষও এখন লঙ্কানরাও।

অন্যদিকে, ৬ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে আট পয়েন্ট এখন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের। তাদের এখনো তিন ম্যাচ বাকি। ম্যাচগুলো তিন ফেভারিটদের সঙ্গে হওয়ায়, সেগুলোতে জেতার সম্ভাবনা অনেকটা কম। এতে করে তাদের পয়েন্ট আটই থাকবে। যা বাংলাদেশের সেমিতে যাওয়ার রাস্তা এগিয়ে দিবে।

এদিকে, শ্রীলংকার পয়েন্ট ৬। তাদের সামনে রয়েছে আসরে একটিমাত্র জয় পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং চার ম্যাচে ৩ জয় পাওয়া ভারত।

আসরের খেলাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এক দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার সম্ভাবনা আছে লঙ্কানদের। বাকি ক্যারিবিয়ান আর কোহলিদের বিপক্ষে তেমনটা পাত্তা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই লঙ্কানদের। এতে করে তাদেরও আট পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

অপরদিকে, ৫ ম্যাচ খেলে ১টিতে জয় আর তিনটিতে হার এবং পরিত্যক্তের এক পয়েন্ট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিন পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সাতে অবস্থান করছে।

তাদের এখনো ৪টি ম্যাচ বাকি। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, ভারত, আফগানিস্তান এবং শ্রীলংকা। আফগান এবং লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও কিউই এবং ভারতের বিপক্ষে সে সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।

এতে করে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৭। বাংলাদেশ যদি ৩টিতেই জয় পায় তবে গেইলরা ৪টির ৩টিতে জয় পেলেও সমস্যা হবেনা।

আর, ৫ ম্যাচ খেলে একমাত্র স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয় পাওয়া পাকিস্তান হেরেছে তিনটিতে, পরিত্যক্তের এক পয়েন্টসহ ৩ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান করছে নয়ে। তাদের সামনে রয়েছে প্রোটিয়া, কিউই, আফগান এবং টাইগাররা।

প্রোটিয়া এবং আফগানদের বিপক্ষে জয় পাওয়া সম্ভব হলেও, কিউই এবং টাইগারদের সামনে দাঁড়ানোর মত সক্ষমতা নেই সরফরাজদের।

এতে তাদের পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়াবে ৭ এ। এমনকি যদি তারা কিউইদের বিপক্ষে জয় পায়, আর যদি বাংলাদেশ সবগুলোতে জিতে তাহলেও বিদায় নিতে হবে পাকিস্তানকে।

তবে সব সমীকরণ পাল্টে দিতে পারে মাঠের পারফর্মেন্স। তাই অন্যদের উপর ভরসার আগে নিজেদের জয়ের দিকেই আগে তাকাতে হবে টাইগারদের।

সব সমীকরণ তখনি ঠিক থাকবে, যখন বাংলাদেশ সব ম্যাচে জিতবে।

আশার কথা হলো বাংলাদেশ কম ম্যাচে জয় পেলেও, পারফর্মেন্সে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে মাশরাফিরা। তাই বলাই যায়, জেতা কঠিন হবে হয়তো কিন্তু অসম্ভব নয়।

আগামী ২৪ জুন সাউদাম্পটনে জয়ের আশায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
আই/