ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কেন ক্যাপসুল এন্ডোসকপি করা হয়?

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

প্রকাশিত : ০৯:০৬ এএম, ২৬ জুন ২০১৯ বুধবার

ক্যাপসুল এন্ডোসকপি পরিপাকতন্ত্রের রোগ নির্ণয়ের একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি ভিটামিন সাইজ ক্যাপসুল সেবনের মাধ্যমে রোগীর পারিপাকতন্ত্র (মুখ থেকে পায়ুপথ)-এর চলমান ও স্থির ছবি সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে।

ভিটামিন ক্যাপসুল সাইজের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্যাপসুলের মধ্যে রয়েছে একাধিক ক্যামেরা, লাইট, ব্যাটারি এবং তথ্য সংরক্ষণকারী ডিভাইস।

পরিপাকতন্ত্রের রোগ নির্ণয়ের গতানুগতিক পদ্ধতির (এন্ডোসকপি ও কোলনসকপি) মাধ্যমে যখন উপসর্গের কারণ নির্ণয় করা যায় না, তখন ক্যাপসুল এন্ডোসকপি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পরীক্ষা পদ্ধতি বিশেষত নিম্নক্ত ক্ষুদ্রান্ত্রের রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদ্ধতিঃ

১. ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্ষত (আলসার), প্রদাহ, পলিপ ইত্যাদি

২. রক্ত স্বল্পতার অজ্ঞাত কারণ নির্ণয়

৩. ক্রন্স ডিজিজ

৪. টি.বি

৫. সিলিয়াক ডিজিজ

৬. দীর্ঘকালিন ডাইরিয়া

৭. পেটে ব্যথা

কিভাবে ক্যাপসুল এন্ডোসকপি করা হয়?

১. চিকিৎসকের পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী পরীক্ষাপূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

২. পরীক্ষার দিন সকাল বেলা খালি পেটে ক্যাপসুল সেবন করতে হবে।

৩. রোগী ক্যাপসুলটি গিলে ফেলার পরে এটি পরিপাকতন্ত্রের স্বাভাবিক গতিতে নিচে নামতে থাকে এবং পায়ুপথে বের হয়ে আসে। এ সময় ক্যামেরা প্রায় কয়েক হাজার ছবি ধারণ করে। ক্যাপসুল সাধারনত ১ থেকে ৩ দিনে পায়ুপথে বের হয়ে আসে। বের হয়ে আসা ক্যাপসুলের ছবি ডাক্তারগণ কম্পিউটারে ডাউনলোড করে পর্যবেক্ষণ করেন এবং রোগ নির্ণয় করেন।

 ক্যাপসুল এন্ডোসকপির সুবিধাসমূহঃ

 

১. সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত

২. হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নাই

৩. পূর্ণ স্বাভাবিক কার্যক্রম করা যায়

৪. কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই

৫. এ্যানেস্থেশিয়া অথবা ঘুমের ওষুধ দরকার নেই

৬. অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্যাপসুলের মাধ্যমে, পেসমেকার বা যেকোন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ইমপ্ল্যান্ট করা রোগী এই পরীক্ষা করতে পারে

৭. দশ থেকে উর্ধ্বে যে কোনও বয়সের এবং ওজনের ব্যক্তি এই পরীক্ষা করতে পারবে।

সতর্কতা 

১.গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে

২.পূর্ববর্তী কোন পরিপাকতন্ত্রের অপারেশন করা থাকলে

৩.জি আই অবস্ট্রাকশন থাকলে

৪.প্যারালাইসিস থাকলে

৫.গ্যাস্ট্রোপ্যারাসিস থাকলে 

লেখক: চেয়ারম্যান, হেপাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।