ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জোটে থেকেই কর্ণেল অলির নতুন জোট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৮ পিএম, ২৭ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার

জাতীয় নির্বাচনের পরে ২০ দল ছেড়ে গিয়েছিলেন ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ। এবার ২০ দলের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদও দিলেন নতুন জোটের ঘোষণা। সংসদে যোগ দেওয়া নিয়ে বিএনপির সঙ্গে মতানৈক্যের মধ্যে নতুন এই জোটের ঘোষণা দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসে ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ নামে এই জোট ঘোষণা করা হয়। নবগঠিত এই জোটে কল্যাণ পার্টির সঙ্গে রয়েছে ২০ দলীয় জোট শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও ন্যাশনাল মুভমেন্ট। তবে নতুন এই জোট ঘোষণা করলেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটেও থাকছেন বলে জানিয়েছেন অলি আহমদ।

জাতীয় মুক্তিমঞ্চ থেকে নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের অধীনে পুনরায় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

মঞ্চের ১৮ দফা হলো- অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার লুটপাট, অর্থ পাচারসহ দুর্নীতি রোধে সুপ্রিম কোর্টের নেতৃত্বে এক বা একাধিক জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার নেতা-কর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদানে লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন, খাদ্যে ভেজাল রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সম্বলিত নতুন আইন প্রণয়ণ, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়া, রাজনৈতিক দলের জন্য সংবিধান অনুযায়ী সমান সুযোগ সৃষ্টি করা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে তার আইনের সংশোধনী আনা ইত্যাদি।

অলি আহমেদ বলেন, “আমরা আমাদের ১৮ দফা নিয়ে জনগণের কাছে যাব। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের এই জাতীয় মুক্তিমঞ্চ কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে না, কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাউকে আমরা সাহায্য করব না, লিপ্তও হবে না।

“আমরা আশা করি, বিরোধী দলসমূহ এবং বিবেকবান ব্যক্তিগণ দলে দলে জাতীয় মুক্তি মঞ্চে যোগদান করে জাতিকে মুক্তি এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করার লক্ষ্যে এগিয়ে আসবেন।”

সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভানেত্রী তাসমিয়া প্রধান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের একাংশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমেদ আলী কাশেমী, ন্যাশনাল মুভমেন্টের সভাপতি মুহিব খান এবং এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল একটি ফুলের তোড়া অলির হাতে তুলে নিয়ে জাতীয় মুক্তি মঞ্চে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির গোলাম মাওলা রনি, সারোয়ার হোসেনসহ একদল নেতা-কর্মীদেরও দেখা গেছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ২০ দলের বাইরে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আলাদা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে। ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্ট বিএনপির সমন্বয়ের মধ্যে ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই ভোটের ফল প্রত্যাখ্যানের পর সংসদে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা ছিল ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের। কিন্তু বিএনপি ও গণফোরামের বিজয়ীদের শপথ গ্রহণ করলে তাতে ক্ষুব্ধ হন অলিসহ অন্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে কর্ণেল অলি বলেন, “দেশের বর্তমান নাজুক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমরা নির্বিকার থাকতে পারি না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। বেগম জিয়া যদি কারাগার থেকে মুক্ত হন, একনায়কতন্ত্র থেকে যদি দেশ মুক্ত হয়, তখন জাতি মুক্ত হবে।

“এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ ঘোষণা করছি। আমি আশা করি, জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সকল শক্তি আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতিকে মুক্ত করতে এগিয়ে আসবে ‘’

এনএম/এসি