ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জেনে নিন যেসব বদভ্যাস পেটে মেদ জমায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১০ পিএম, ২৮ জুন ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৪২ পিএম, ২৮ জুন ২০১৯ শুক্রবার

মুটিয়ে যাচ্ছেন, চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে, একটু পরিশ্রমে হাঁপিয়ে উঠছেন! এর কারণ একটাই পেটে মেদ জমছে। এ নিয়ে অনেকেই অস্বস্তিতে আছেন। কেন মেদ জমছে চিন্তা করেছেন কি? শুধু ফ্যাট জাতীয় খাবারেই পেটে মেদ জমে না। আপনার অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং ভ্রান্ত খাদ্যাভ্যাসও পেটের মেদের জন্য দায়ী।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু বদভ্যাস রয়েছে যেগুলো পেটের মেদ বাড়িয়ে দেয়। সময় মত পেটের এই মেদের দিকে নজর না দিলে ঝুঁকিপূর্ণ রোগের অন্যতম কারণ হতে পারে। পেটের মেদ হৃদরোগের সঙ্গে জড়িত। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, কিডনির রোগ এমনকি ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

বেশিরভাগ সময় নিয়ম না মেনে খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের বিভিন্ন অভ্যাসের কারণেই পেটে মেদ বা চর্বি বেড়ে যায়। পেটের মেদ বাড়ার কারণগুলো আগে থেকেই জানা থাকলে মেদ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। জেনে নিন দৈনন্দিন কোন অভ্যাসগুলো মেদ বাড়ার জন্য দায়ী :

সকালের নাস্তা না খাওয়া

অনেকেই তাড়াহুড়া করে সকালের নাস্তা না খেয়েই কাজে বেরিয়ে যান, এটি খুবই অনুচিত। কারণ নাস্তা না খেলে শরীরের বিপাক ক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মেদ জমতে শুরু করে। সারারাত ঘুমের পর সকালের পুষ্টিকর নাস্তা সারাদিনের শক্তি যোগায়। তাই সকালের নাস্তায় মনোযোগী থাকুন।

ডেস্কের কাজ

যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের পেটে বেশি মেদ জমে। নারী-পুরুষ সবাই এ সমস্যায় ভোগেন। তাই ডেস্কে কাজ করতে হলে একটানা বসে কাজ করবেন না। মাঝে মাঝে উঠে দাঁড়াবেন এবং যখনই সময় পান তখন একটু হাঁটাহাঁটি করুন।

পরিমাণ মত না খাওয়া

পেটের মেদ বাড়ানোর আরেকটি বড় কারণ পরিমাণ মত না খাওয়া। শরীরকে সুন্দর গঠনে এবং সুস্থ রাখতে পরিমাণ মত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই রয়েছেন না ভেবেই যখন তখন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলেন। এই অভ্যাস মেদ বাড়ানোর জন্য দায়ী।

শারীরিক ব্যায়াম না করা

সুস্থ থাকার জন্য শারীরিক ব্যায়াম করার কোন বিকল্প নেই। শারীরিক ব্যায়াম শরীরের অপ্রয়োজনীয় বাড়তি ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলে। তাই যখন নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করা শুরু করবেন তখন আস্তে আস্তে পেটের মেদও কমতে শুরু করবে।

রাতে দেরি করে খাওয়া

খাওয়ার পর তা হজম হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। বিশেষ করে রাতে ভরপেট খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাতে গেলে সেই খাবার সঠিকভাবে হজম হওয়ার সময় পায়না। এর ফলে তা পেটের মেদ হিসেবেই জমা হয়। তাই রাতে ঘুমানোর অন্তত ২ থেকে ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বনেটেড ড্রিঙ্কস, অ্যালকোহল, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি জাতীয় খাবারগুলো দেহে খুব দ্রুত ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ায়। কারণ এসব খাবারগুলোতে চিনি ও ক্যালরির পরিমাণ খুব বেশি থাকে যা পেটের মেদ বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

রাত জাগা বা ঘুমের অপর্যাপ্ততা

সুস্বাস্থ্যের জন্য রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। রাতের ঘুম অন্য কোন সময়ে পূরণ হয় না। অনেকে রাত জেগে কাজ করেন এতে ঘুম কম হয়। ফলে মেদ বাড়তে থাকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। রাতে ক্ষুধা লাগলে স্ন্যাকস জাতীয় খাবার খাবেন না। ফল অথবা পুষ্টিকর খাবার খাবেন।

ক্ষুধা না লাগলেও খাওয়া

পেটে ক্ষুধা না থাকলেও অনেক সময় মনের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এটা-সেটা খেয়ে থাকেন। এই অভ্যাস খুবই ক্ষতিকর শরীরের জন্য। এতে দ্রুত মেদ বাড়ে।

সময়মত খাবার না খাওয়া

অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অনেকক্ষণ আগেই ক্ষুধা লেগেছে, কিন্তু খাওয়ার সময় পাচ্ছেন না। আবার যখন সময় পেলেন, তখন অনেক বেশি খেয়ে ফেললেন। এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে পেটে মেদ জমে। তাই সঠিক সময় এবং পরিমিত খাদ্য  গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবারে বেশি না খেয়ে বার বার অল্প করে খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।

প্রোটিনযুক্ত খাবার কম খাওয়া

প্রোটিন জাতীয় খাবার আমাদের দেহের রক্তের শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য খুবই জরুরি। এটি দেহের বিপাক ক্রিয়াকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং দেহে চর্বির পরিমাণ কমায়। তাই যদি কম প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া হয় তাহলে দেহে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

উপরোক্ত বদভ্যাসগুলো পরিহার করে সঠিক খাবার গ্রহণ এবং নিয়ম কানুন মেনে চললেই খুব অল্প সময়েই ভাল ফল পাবেন। মেদমুক্ত থাকতে প্রথমে দরকার আপনার ইচ্ছা শক্তি। এর সঙ্গে আরও প্রয়োজন সচেতনতা এবং শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম।

তথ্যসূত্র : পুষ্টি বাড়ি।

এএইচ/