ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

চুক্তিবদ্ধ কৃষকরাই ‘প্রাণ’ এর প্রাণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪২ পিএম, ৩০ জুন ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৬:৪৮ পিএম, ৩০ জুন ২০১৯ রবিবার

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। যেখানে সিংহ ভাগ লোকের আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। কৃষির উপর নির্ভর করে তাদের জীবিকাসহ যাবতীয় কর্মকান্ড। প্রাণ গ্রুপ সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কৃষক ও কৃষি ব্যবস্থাকে আরো গতিশীল ও সহায়তা করতে কনট্রাক্ট ফার্মিং এর ব্যবস্থাকে প্রসারিত করছে। বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় কনট্রাক্ট ফার্মিং আগে থেকে প্রচলিত থাকলেও তা মাত্র ২/১টি ফসল যেমন আখ বা তামাক চাষের মধ্যেই সীমাবদ্ব ছিল কিন্তু প্রাণ গ্রুপ তা বাড়িয়ে বর্তমানে ৭-৮ টি ফসলে উন্নীত করেছে।

বেশ কয়েক বছর থেকেই বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ কৃষি প্রক্রিয়াজাতকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাণ এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেড কনট্রাক্ট ফার্মিং চালু করেছে। বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহ রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও হবিগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বিভিন্ন খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সাথে কনটাক্ট ফার্মিং বা চুক্তি ভিত্তিক চাষ পদ্বতি চালু রয়েছে। কনট্রাক্ট ফার্মিং এর মাধ্যমে আম, দুধ, মসলা, ডাল, বাদাম, টমেটো, কাসাভা, চিনিগুড়া চালসহ আরো বেশ কয়েকটি ফসল সরাসরি কৃষকদের কাছে থেকে সংগ্রহ করছে প্রাণ। আর এর মাধ্যমে সারাদেশে প্রায় এক লাখ কৃষক সরাসরি উপকৃত হচ্ছে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের জনগণের দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান বিশেষ করে নারীদের জন্য ব্যাপক কর্মসংন্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে যা এই অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে অবদান রাখছে।

দেশে ফ্রুট ড্রিংক কিংবা জুসের বাজারে সেরা ব্র্যান্ড প্রাণ। এছাড়া বিশ্বের ১৪১টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে জুস ও প্রাণ এর পণ্য। প্রাণ গ্রুপ উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের সরবরাহ করা আম থেকেই জুস বা ফ্রুট ড্রিংক তৈরি করছে। চলতি বছর ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রাণ গ্রুপ। বর্তমানে রাজশাহীর গোদাগাড়ি বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও নাটোরের একডালায় প্রাণ এগ্রো লিমিটেড এর কারখানায় এই আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম চলছে।

প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেডের কনট্রাক্ট ফার্মিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মো: কামরুজ্জামান বলেন, “প্রতিবছর নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর, মেহেরপুর এবং সাতক্ষীরা থেকে আম সংগ্রহ করছে প্রাণ। সংগ্রহের পর এসব আম পাল্পিংয়ের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে রাজশাহী ও নাটোরের কারখানায়। এই পাল্প থেকেই সারাবছর তৈরি হচ্ছে ম্যাংগো ড্রিংক, জুস, ম্যাংগো বারসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী”।

কনট্রাক্ট ফার্মিং সম্বন্ধে প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিঃ এর চিফ অপারেটিং অফিসার মাহাতাব উদ্দিন জানান, “কনট্রাক্ট ফার্মিং এর মাধ্যমে কৃষকদেরকে সর্বাধুনিক চাষ পদ্বতি সম্বন্ধে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় । যাতে করে সে আধুনিক চাষ পদ্বতির মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারে। তিনি আরো বলেন, যে কোন ভাল পণ্য উৎপাদনের জন্য দরকার উচ্চ গুনগুত মান সম্পন্ন কাঁচামাল, আর এটা তখনই সম্ভব যখন কোম্পানি নিজেদের তত্ত্বাবধানে কাঁচামাল উৎপাদন করে। কেবল মাত্র কনট্রাক্ট ফার্মিং এর মাধ্যমেই কৃষক সর্বোচ্চ উপকৃত হতে পারে। কনট্রাক্ট ফার্মিং এ কৃষককে উচ্চ ফলনশীল বীজ দেয়া হয়। তাছাড়া এ ব্যবস্থায় কৃষক সব চাইতে বড় সুবিধা ভোগ করে তা হলো তার পুরো ফসলটাই বিক্রির নিশ্চয়তা। এতে করে মধ্যসত্বভোগীর সংখ্যাও থাকবে না। তিনি আরো বলেন, আজ যদি আমরা পল্লী এলাকাতেই সারা বছর কৃষি কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারি তা হলে তা ব্যাপক হারে লোকজনকে শহর মুখী হওয়াকে নিরোৎসাহিত করবে এবং বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবহেলিত কৃষকের ভাগ্যেন্নয়নে কনট্রাক্ট ফার্মিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারন এর আওতায় কোম্পানির তরফ থেকে কৃষকদের ভাল বীজ, সার, সেচ এবং কীটনাশকের সুবিধা দেয়া হয়। পাশাপাশি ফসল বিক্রিরও পূর্ণ নিশ্চয়তা থাকে। তাছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতির ভীতও মজবুত হয়ে উঠতে সহায়তা করছে কনট্রাক্ট ফার্মিং।

আরকে//