ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

আমোদে পাখি রামগাংরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:২৩ পিএম, ৪ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:৫৫ পিএম, ৪ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

পাখির নাম রামগাংরা। নামটা বড়সর হলেও এর আকৃতি তেমন নয়। ছোট পাখি রামগাংরা। এরা কিন্তু চঞ্চল ও অস্থিরমতির। সঙ্গে সঙ্গে আমোদে বা ফূর্তিবাজও। রামগাংরা রেগে গেলে একরোখা। বাংলাদেশের গ্রাম শহর সর্বত্রই গাছপালা বহুল এলাকায় এদের দেখা যায়।

রামগাংরার ইংরেজি নাম গ্রিন-ব্যাকেড টিট (Green-backed Tit)। বৈজ্ঞানিক নাম Parus monticolus। এ পাখি ‘সবুজ পিঠ তিত’ নামেও পরিচিত। এদের বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, পাকিস্তান, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম ও লাওস পর্যন্ত।

রামগাংরা দৈর্ঘ্যে ১২.৫-১৩ সেন্টিমিটার। ওজন ১২-১৭ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একইরকম তবে পুরুষ পাখির রং উজ্জ্বল। গায়ের রং ধূসর ও সাদা কাল। মাথা, ঘাড়, ঠোঁট ও বুক গাঢ় কালো। চোখের নিচে চওড়া সাদা টান। তার নিচেই কালো চওড়া টান, যা ঘাড়ের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ঘাড় চেপে রাখলে কালো চওড়া টানটি সরু রেখার মতো দেখায়। পিঠ সবুজাভ জলপাই।

ডানা নীলাভ কালো। ডানায় গোড়ায় থরে থরে সাজানো কালো-সাদা টান। লেজের পালক নীলাভ কালো। দু-একটা কালো-সাদা পালকও রয়েছে। লেজের প্রান্তর পালক সাদা। গলা থেকে কালো চওড়া টান মাঝ বরাবর নিচের দিকে নেমে গেছে। চোখ কালো, পা ধূসরাভ কালো। এদের মধ্যে কিছুর রঙের ভিন্নতা দেখা যায়। এদের কালো টান ছাড়াও বুকের নিচ থেকে তলপেট হলদে রঙের। 

এই পাখি একাকী, জোড়ায় এবং ছোটখাটো বেশ কিছু প্রজাতির পাখির সঙ্গে মিলে গাছের কাণ্ড, পাতা এবং মগডালে ঘুরে, কখনো উল্টো হয়ে ঝুলে থেকেও কীটপতঙ্গ এবং শুঁয়োপোকা ধরে খায়। দিনভর খেয়েও যেন ক্ষিদে মিটে না। খাবারের খোঁজে গাছে গাছে ঘুরে বেড়ায়। এদের খাদ্য তালিকায় আরও রয়েছে মাকড়সা, শস্যদানা ও ছোট নরম ফল।

রামগাংরা সহজে মাটিতে নামে না। মাটিতে হাঁটতে পটু নয়। বাসা বাঁধার জায়গা নির্বাচনে স্ত্রী পাখির পছন্দই চূড়ান্ত। বাসা বাঁধে ৫-৬ দিনে। স্ত্রী পাখি বাসা পাহারায় অতি সতর্ক। যে কোন মৌসুমে গাছের ফোঁকড়ে বাসা বাঁধে। বাসা বাঁধতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ঘাস, শ্যাওলা, চুল, পশম, উদ্ভিদের তন্তু ও পালক। ডিম পাড়ে ৪-৫টি। বাচ্চা ফোটতে সময় লাগে ১৭ থেকে ১৮ দিন। বাচ্চা উড়তে শেখার পর খুবই চঞ্চল হয়ে উঠে।

তথ্যসূত্র : পাখি পরিচিত বই এবং ইন্টারনেট।

এএইচ/