ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রিফাত হত্যা

এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রিশান ফরাজী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৪ পিএম, ৫ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার

বরগুনার আলোচিত শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামী নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে মামলার ২ নম্বর আসামী রিফাত ফরাজী।

কিন্তু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামী রিফাত ফরাজীর ভাই রিশান ফরাজী। 

এ মামলায় রিশান ছাড়াও ৩, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ১০ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

এর আগে ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। ২ নম্বর আসামী রিফাত ফরাজী (২৩), ৪ নম্বর আসামী চন্দন (২১), ৯ নম্বর আসামী মো. হাসান (১৯), ১১ নম্বর আসামী অলিউল্লাহ অলি (২২) ও ১২ নম্বর আসামী টিকটক হৃদয় (২১) গ্রেফতার হয়েছে।

গত ২৫ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

পরদিন সকালে নিহত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম শরীফ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী আপন এই দুই ভাই সরাসরি রিফাত শরীফ হত্যায় অংশ নিয়েছিল।

গত মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে বরগুনা থেকে গ্রেফতার হয়েছে রিফাত ফরাজী। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে। তবে তার ভাই রিশানকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।

রিফাত ও রিশান বরগুনা শহরের ধানসিঁড়ি সড়কের দুলাল ফরাজীর ছেলে। রিফাত ফরাজী বরগুনা কলেজিয়েট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক ও ২০১৪ সালে বরগুনা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করে।

এরপরই সে বরিশালের ইনফ্রা পলিটেকনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।

পরপর সেমিস্টারে অকৃতকার্য হওয়ার পর সে বরগুনায় চলে আসে। গড়ে তোলে সন্ত্রাসী গ্রুপ। এই গ্রুপে আছে তার ভাই রিশান ফরাজীও। ইতিমধ্যে তাদের হাতে অসংখ্য মানুষ লাঞ্ছিত হয়েছেন।

তুচ্ছ কারণে লোকজনকে মারধর করত তারা। এসব কারণে কয়েকবার তারা গ্রেফতার হলেও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ভায়রার ছেলে হওয়ায় খুব স্বল্প সময়েই মুক্তি পায় তারা।

জানা গেছে, প্রতিদিন রিফাত ফরাজীর বাহিনীর আনাগোনা ছিল বরগুনা সরকারি কলেজে। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, নতুন শিক্ষার্থীদের ০০৭ গ্রুপের সদস্য করাসহ কলেজ ক্যাম্পাসে মাদকের আখড়া বসিয়েছিল রিফাত বাহিনী।

ছোট ভাই রিশানের দায়িত্ব ছিল বন্ড গ্রুপের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ করা এবং ওই সদস্যদের পর্যবেক্ষণে রাখা।

বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ঘাতকদের চিহ্নিত করা হয়েছে। হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রিশানসহ পলাতক আসামিরা পুলিশের নজরদারিতে আছে। শিগগিরই তারাও ধরা পড়বে।

বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অপরাধকে আমরা অপরাধ হিসেবেই দেখবো। এর সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। ইতিমধ্যে মামলার অর্ধেক আসামি গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।

২৫ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক।

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

স্বামীকে বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্ত্রাসীদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

তিনি বলেন, হামলার সময় অনেকেই ছিল। তাদের সবাইকে চিনতে না পারলেও প্রধান আসামী নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজীকে চিনতে পেরেছেন বলে জানিয়েছিলেন মিন্নি।

আই/