ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ডিজিটাল সিটিতে পরিণত হচ্ছে সিলেট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১২ এএম, ৭ জুলাই ২০১৯ রবিবার

সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে সিলেট শহরকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন সুবিধাসম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল শহর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ৩০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সিলেট নগরীর ডিজিটাইজেশন কাজটি বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্প’।

এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ, সড়ক ও জনবহুল স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে অপরাধী সনাক্ত করার জন্য এফআর এবং গাড়ির নাম্বার প্লেট সনাক্তকরণ যন্ত্র এএনপিআর ক্যামেরা।

প্রযুক্তির মাধ্যমে নগরবাসীর নিরাপত্তা, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটনসহ নাগরিক সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এগারো ধাপে সাজানো হয়েছে প্রকল্প।

এ প্রকল্পে রাখা হয়েছে সিসি ক্যামেরা, পাবলিক ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন, কম্পিউটার লিটারেসি সেন্টার, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল অটোমেশন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের দশ সেবাকে অটোমেশন করা, নাগরিক সুবিধা উন্নত করা। এছাড়াও পর্যটকদের জন্য ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, ডিজিটাল টেলিফোন ডিরেক্টরি এবং বিভিন্ন সেবা সংস্থা থেকে প্রবাসীদের বাড়তি সুবিধা দিতে তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেস তৈরি করা।

ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের সহকারী পরিচালক মধূসুদন চন্দ বলেন, এগারোটি কর্মসূচির মধ্যে প্রথম তিনটি হার্ডওয়্যার-ভিত্তিক এবং ৮টি সফটওয়্যার-ভিত্তিক। প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে যাতে এ কার্যক্রম কোনভাবে ব্যাহত না হয়।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে নগরীর ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পিলার স্থাপন করে ৬৩ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ক্যামেরা ৩৬০ ডিগ্রি জুমিং সুবিধা রয়েছে। ২০টি বিশেষ ক্যামেরা ছাড়া বাকি ৯০ ক্যামেরা নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে।

সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে এসব ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে ৩৯টি আইপি স্থাপন করেছে। তাই তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের ক্যামেরাগুলো নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে।’

সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী উপ কমিশনার (এডিসি) মো. জেদান আল মুসা বলেন, ‘সিলেট নগরীতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় পুরো সিলেট নগরী এর আওতায় চলে আসবে। উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন এসব ক্যামেরার মাধ্যমে কন্ট্রোলরুম থেকে চিহ্নিত করা যাবে কোথায় ট্রাফিক সমস্যা হচ্ছে।’

ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের আওতায় নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, এমসি কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ ৬২ এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বিনামূল্যে ওয়াইফাই জোন তৈরি করা হচ্ছে। এসব জায়গায় ১২৬টি ওয়াইফাই এক্সেস পয়েন্ট (এপি) থাকবে।

বিনামূল্যের এ ওয়াইফাই ব্যবহারের জন্য প্রবেশ সুবিধা জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। যে কোনো ব্যক্তিই এ সুবিধায় ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবেন। পর্যটকরাও বিনামূল্যে এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবধরণের ওয়েবসাইট ভিজিট করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকবে। শুধু প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য নিশ্চিত করে যুক্ত হতে পারবেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ সালে দেশের প্রথম ডিজিটাল সিলেট সিটি গড়ার প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ সরকার। ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের ডকুমেন্ট অব প্রজেক্ট প্ল্যান (ডিপিপি) অনুযায়ী সিলেট নগরীর ডিজিটাইজেশন করার কাজ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। এ প্রকল্পের মেয়াদ গত মাসে (জুন ২০১৯) শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্প কাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্র: বাসস

এমএস/