ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

পরিবারকে সুখী করার উপায়সমূহ জেনে নিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:২৪ পিএম, ৭ জুলাই ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৯:০৭ পিএম, ৮ জুলাই ২০১৯ সোমবার

দুই বা এর অধিক সদস্য নিয়ে পরিবার গঠিত হয়। একটি প্রবাদ আছে ‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে।’ এই রমনী বা নারীই পরিবারের প্রাণ। এই প্রাণ তখনই প্রস্ফূটিত হবে যখন পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে সহযোগিতা করবে। পরিবারের মধ্যে শ্রদ্ধা, মমতা ও সহানুভূতি চালু থাকলে সেই পরিবার হবে আদর্শ পরিবার।

সংসার সুখী করার জন্য একে অপরের সহযোগী সহযোদ্ধা হতে হয়, সেক্রিফাইস করতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষে দিতে হয় অনেক ছাড়। ভাগাভাগি করতে হয় সুখ দুঃখ ভালোলাগা-ভালোবাসা। মাঝে মধ্যে অনেক পরিবারে ছোটখাটো ঝগড়াঝাটি থেকেই ঘটে বিপর্যয়। তিক্ততায় ভরে যায় মধুর সম্পর্কটি। সন্তান, পরিবারের অন্য সদস্যরা হন মানসিক চাপের শিকার। একটু সচেতন হলেই এসব থেকে বেরিয়ে পারিবারিকভাবে সুন্দর জীবন যাপন করা সম্ভব।

এবার জেনে নিন পরিবার সুখী সমৃদ্ধ করার উপায়গুলো :

* পরিবার গঠিত হয় একজন নারী ও একজন পুরুষকে ঘিরে। সাধারণত পুরুষ পরিবারের প্রধান হলেও নারীই পরিবারের প্রাণ। এই প্রাণকে কেন্দ্র করেই পরিবার টিকে থাকে।

* নারী পুরুষের অর্ধেক নয়। পরিবারে নারী এবং পুরুষ পরস্পরের পরিপূরক।

* পারস্পরিক মমতা, সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাবোধ সুখী পরিবারের প্রধান শর্ত।

* পরিবারের সদস্যদেরকে কখনো বোঝা মনে করবেন না। তারাই হতে পারে আপনার দুঃসময়ের সঙ্গী।

* স্ত্রীর শারীরিক ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ-খবর নিন। অসুস্থ হলে নিজে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

* সাধারণভাবে আমরা ব্যক্তি ও তার আচরণকে এক করে ফেলি। ফলে অশান্তি সৃষ্টি হয়। আচরণ থেকে ব্যক্তিকে আলাদা করতে পারলেই সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায়।

* অন্যের ব্যাপারে কখনোই নাক গলাবেন না। প্রত্যেকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন।

* পরিবারে কান-কথায় প্রভাবিত হবেন না। সত্য যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিন। এতে আপনার ভুল করার সম্ভাবনা কমবে।

* স্বামী-স্ত্রীর ভুল বোঝাবুঝিতে তৃতীয় পক্ষকে জড়াবেন না। দুজনে মিলে সমস্যার সমাধান করুন।

* নিজের আয় সম্পর্কে প্রথমেই স্ত্রীকে সুস্পষ্ট ধারণা দিন। এতে সমঝোতা বাড়বে। অযৌক্তিক প্রত্যাশাও কমে যাবে।

* স্বামীর কাছ থেকে আপনার প্রত্যাশাকে সবসময় যুক্তিসঙ্গত সীমার মধ্যে রাখুন, বাড়তি খরচের চাপ সৃষ্টি করে স্বামীকে দুর্নীতি করতে বাধ্য করবেন না।

* আত্মীয় স্বজনকে উপহার দেয়া বা সাহায্য করার ব্যাপারে স্বামী/স্ত্রীকে অযৌক্তিক বাধা দেয়া থেকে বিরত থাকুন।

* ছোট-খাটো কিংবা তুচ্ছ বিষয় এড়িয়ে চলুন।

* যে কোন পারিবারিক সিদ্ধান্ত সদস্যদের পারস্পরিক আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণ করুন।

* স্বামী/স্ত্রীর মা-বাবা বা আত্মীয়দের নিয়ে তাকে খোঁটা দেবেন না।

* অন্যের কাছে স্বামী/স্ত্রীকে ছোট করবেন না বা বদনাম করবেন না।

* কর্মস্থল/বাইরের রাগ-ক্ষোভ সন্তান, স্ত্রী বা গৃহকর্মীর ওপর প্রকাশ করবেন না।

* বাসায় যখন ফিরে আসবেন তখন পেশাগত সব ঝামেলা অফিসেই রেখে আসুন। পেশাগত দুশ্চিন্তা বা সমস্যা যেন পারিবারিক শান্তিকে বিঘ্নিত না করে।

* বাসস্থানকে আকর্ষণীয় করে তুলুন। পরিবারের সদস্যদের নামে গাছ লাগান ও সেগুলোর যত্ন নিন। বিভিন্ন জনের নামে রোপিত গাছের যত্ন নেয়ার সময় যিনি যত্ন নিচ্ছেন তার মনে তাদের প্রতি মমতা বাড়বে। এভাবে প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে আপনার পারিবারিক সম্পর্কও সুন্দর হয়ে উঠবে।

* অর্থ অপচয় করবেন না। হুজুগের বশে কিনলে পরে অনুশোচনা করতে হবে।

* স্ত্রীকে গৃহকর্মে ও সন্তান পালনে সাধ্যমতো সহযোগিতা করুন। বাইরে ব্যস্ততার কারণে পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করতে না পারলে স্ত্রীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করুন।

* শাশুড়ি হিসেবে পুত্রবধূকে প্রতিপক্ষ না ভেবে নিজের মেয়ে মনে করুন। তার ভুলত্রুটিকে সহজভাবে নিন। পারিবারিক পরামর্শে তাকেও অংশীদার করুন।

* শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মার মতো শ্রদ্ধা করুন। স্ত্রী/স্বামীর ভাইবোনকে নিজের ভাইবোনের মতো ভালবাসুন।

* সম্পর্কের ক্ষেত্রে অতি আবেগকে পরিহার করে বাস্তবমুখী মানসিকতার বিকাশ ঘটান।

* সকালে ঘুম ভাঙলেই ‘শোকর আলহামদুলিল্লাহ’ বা ‘প্রভু তোমাকে ধন্যবাদ’ বলাকে পারিবারিক রেওয়াজে পরিণত করুন।

তথ্যসূত্র : কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন

এএইচ/এসি