ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

বেরোবি রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা, বিক্ষোভে কর্মচারিরা

বেরোবি প্রতিনিধি :

প্রকাশিত : ০১:০৬ পিএম, ৮ জুলাই ২০১৯ সোমবার

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কর্মচারীদের উপর হামলার বিচার ও চার দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে টানা ১১ কার্যদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে কর্মচারীরা। রোববার নতুন কর্মসূচি হিসেবে রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ ওই দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছে তিন শতাধিক কর্মচারী।

এদিকে গত এগারো দিনে দাবি পূরণের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন শক্ত আশ্বাস না পাওয়ায় কর্মচারীরা রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানায়। যতদিন না পর্যন্ত তাঁদের দাবি পূরণ না হবে ততদিন পর্যন্ত তালা ঝোলানো এবং এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 

কর্মচারীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, আন্দোলন চলাকালীন সময়ে দুইবার কর্মচারীদের সঙ্গে নামমাত্র বৈঠকে বসেছিলেন প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে কিন্তু দাবি পূরণের ব্যাপারে কোন ধরনের আশ্বাস না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে রোববার তালা লাগিয়েছে।

দাবি পূরণের দাবিতে গত সোমবার থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবহনের গাড়িগুলো চলাচল বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করে আসছে আন্দোলনরত কর্মচারীরা। তবে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ও শিক্ষার্থী পরিবহনের বাস যথারীতি চালু আছে।

রোববার সরেজমিন দেখা যায়, সকাল ১০টায় আন্দোলনরত কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে তারা ফটকের সামনে খোলা জায়গা ও সিঁড়িতে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সেই সঙ্গে তারা দাবি আদায়ের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। ফটকের সিঁড়িতে কর্মচারীরা অবস্থান নেওয়ায় ভবনের ভেতরে যেতে অনেককেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

পরে দুপুর দেড়টায় প্রশাসন ভবনের দুই তলায় অবস্থিত রেজিস্ট্রার ভবনে তালা লাগিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রতিনিধি এবং প্রক্টরিয়াল বডির কোন সদস্যকে দেখা যায়নি।

সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দিনভর অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সেখানে বক্তব্য দেন আন্দোলনরত কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মাহবুবার রহমান, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম, সাধারণ সম্পাদক রশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, যতদিন আমাদের (কর্মচারী) উপর হামলার বিচার এবং চার দফা দাবি পূরণ না হবে ততদিন পর্যন্ত রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পরিবহনের গাড়িগুলো চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জরুরি পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স ও শিক্ষার্থীদের বাস চলাচল যথারীতি চালু থাকবে।

আন্দোলন ও দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মাহবুবার রহমান বাবু বলেন, দাবি পূরণে শুধু আশ্বাস দিলেই চলবে না। এর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।  তিনি জানান, ৩৪৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ২৮৮ জনকে বকেয়া পরিশোধ করা হলেও ৫৮ জন কর্মচারীকে ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫৮ জনের বকেয়া বেতন অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে যা কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা।

উল্লেখ্য, কর্মচারীদের অন্য দাবিগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীবান্ধব পদোন্নতি নীতিমালা বাস্তবায়ন, ৫৮ জন কর্মচারীর ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এবং মাস্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ।

ক্যাম্পাসের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে নিয়োজিত উপপরিদর্শক (এসআই) বলেন, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এবং সার্বিক বিষয়ে প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) আতিউর রহমানকে তাঁর দফতরে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তা রিসিভ করেননি।

এএইচ/