ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে আলকায়দার যুদ্ধের হুমকি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩১ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৯ বুধবার

জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা দিল জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা। এক ভিডিও বার্তায় আল কায়দা প্রধান এ জিহাদের ডাক দেন।

সংগঠনের তরফে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে ভারতীয় সেনা এবং উপত্যকার সরকারের উপর জঙ্গিদের আপসহীন আঘাত হানার নির্দেশে দিয়েছে আল কায়দা প্রধান আয়মান আল-জওয়াহিরি।

দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর কাশ্মীর নিয়ে সম্প্রতি কড়া অবস্থান নিয়েছে মোদী সরকার। সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হবে না বলে বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যার পর উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাড়ি বাড়ি দফায় দফায় ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। তদন্ত শুরু হয়েছে তাঁদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়েও। এমন পরিস্থিতিতে উপত্যাকার জঙ্গিরা যাতে মনোবল না হারায়, তার জন্যই জওয়াহিরি এই বার্তা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক।

২০১২ সালে ওসামা বিন লাদেন প্রতিষ্ঠিত আল কায়দার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে পূর্ব আফ্রিকার সন্ত্রাসী সংগঠন হরকত আল-শাবাব আল মুজাহিদিন। সম্প্রতি তারাই জওয়াহিরির ওই ভিডিয়ো সামনে এনেছে। সেটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে ওয়াশিংটনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং বিদেশ নীতি সংক্রান্ত সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্র্যাসিস’। নিজেদের লং ওয়ার জার্নাল ওয়েবসাইটে জওয়াহিরির বার্তা সবিস্তারে প্রকাশ করেছে তারা।

সাদা পোশাক পরে, ডান দিকে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বাঁ দিকে কোরান নিয়ে ‘ডোন্ট ফরগেট কাশ্মীর’ নামের ভিডিয়োটিতে কথা বলতে শুরু করে জওয়াহিরি। তাতে সে বলে, ‘‘আমার মতে, এই মুহূর্তে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন আঘাতকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত কাশ্মীরের মুজাহিদদের। ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে অর্থ ব্যবস্থাকে, যাতে লোকবল এবং সরঞ্জাম, সব ক্ষেত্রেই মুখ থুবড়ে পড়ে ভারত।’’

জওয়াহিরি আরও বলে, ‘‘কাশ্মীরের লড়াই কোনও আলাদা লড়াই নয়, বরং ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের জিহাদ। সর্বত্র এই বার্তা পৌঁছনো উচিত। যে কাফেররা মুসলিম দেশগুলিকে দখল করে রেখেছে, যত দিন পর্যন্ত তাদের তাড়ানো যাচ্ছে, তত দিন কাশ্মীর, ফিলিপিন্স, চেচনিয়া, মধ্য এশিয়া, সিরিয়া, আরব উপমহাদেশ, সোমালিয়া, ইসলামিক মাঘরেব (উত্তর অফ্রিকার মুসলিম দেশগুলি) এবং তুর্কেস্তানে জিহাদকে সমর্থন করা বিশ্বের সমস্ত মুসলিমের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’’

সীমান্ত সন্ত্রাসের মাধ্যমে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে পাকিস্তান, সে কথাও তুলে ধরে জওয়াহিরি। সেই সঙ্গে ভারত এবং পাকিস্তান— দুই দেশকেই আমেরিকার দালাল বলেও কটাক্ষ করে সে। পাকিস্তানের কাশ্মীর নীতিকে তালিবান এবং অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিদের সঙ্গে তুলনা করে জওয়াহিরি বলে, ‘‘আফগানিস্তান থেকে রাশিয়াকে হটানোর পরেও আরব মুজাহিদিনকে কাশ্মীরে ঢুকতে দেয়নি পাকিস্তান। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে মুজাহিদিনকে শুধুমাত্র ব্যবহার করে এসেছে তারা। কাজ ফুরোলে নির্যাতন করে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।’’ ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাতে আসলে ধর্মের কোনও জায়গা নেই, মার্কিন গোয়েন্দারা এই সীমান্ত বিরোধে কলকাঠি নাড়ে বলেও মন্তব্য করে জওয়াহিরি।

এ বছরের শুরুতে সেনা অভিযানে মৃত্যু হয় উপত্যকার কুখ্যাত জঙ্গি জাকির মুসার। আলকায়দার শাখা সংগঠন আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দের প্রধান ছিল সে। ভিডিয়োয় সরাসরি জাকিরের উল্লেখ না করলেও, কথা বলার সময় জওয়াহিরির পিছনে রাখা ডিজিটাল স্ক্রিনে জাকির মুসার ছবি ভেসে ওঠে। কাশ্মীরে মুজাহিদদের নাশকতায় উৎসাহ দিলেও মসজিদ, বাজার এবং মুসলিম জনসমাগমের জায়গাগুলি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় জওয়াহিরি। আনন্দবাজার

এসি