ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

বিআরটিসিতে অনিয়ম, দুর্নীতি (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৩৭ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৫:০৪ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার

সেবার মান উন্নয়নে কোটি কোটি খরচ করছে বিআরটিসি। এ পর্যন্ত সংস্থাটির বহরে যুক্ত হয়েছে কম-বেশি তিন হাজার বাস ও ট্রাক। এসব উদ্যোগের পরও কি বেড়েছে বিআরটিসির সেবার মান? প্রশ্নটি ঘুরে ফিরে আসে বার বার। সম্প্রতি ভারত থেকে আনা নতুন বাসে বৃষ্টির পানি পড়ার অভিযোগ রয়েছে। বাস ট্রাকগুলোর বডিও নিম্নামানের। এ অভিযোগ অস্বীকারও করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাহলে প্রশ্ন এসব বাস-ট্রাক আসার আগে মান পরীক্ষা কি হয়েছে? হলেও তা করেছে কে?

নানা সময়ে বিআরটিসির জন্য কেনা হয়েছে বাস ও ট্রাক। ২০০৯ সালে ১২২ কোটি টাকায় ২৭৯টি বাস কেনা হয়। এর মধ্যে এখন ১২৫টি সচল। চার বছর পর ২৮২ কোটি টাকায় আনা হয় দক্ষিণ কোরিয়ার দাইয়ু কোম্পানির ২৫৫টি বাস। ছয় বছর চলতে না চলতেই ৮১টি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। একই বছর ভারত থেকে কেনা আর্টিকুলেটেড বাসের ৩৩টিই এখন বিকল। সবশেষ, ভারতীয় ঋণে  বিআরটিসির জন্য কেনা বাসও ত্রুটিমুক্ত নয়। মাত্র দুই মাস আগে সরবরাহ করা বাসের ছাদ থেকে পড়ে বৃষ্টির পানি।

গত এক দশকে ভারত, জাপান, ইংল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে অন্তত সাড়ে ছয়শ ট্রাক। বিপুল খরচে কেনা এসব ট্রাকের বেশিরভাগই অকেজো হয়ে পরে আছে ডিপোতে।

গাড়ীগুলোর বাস্তব রূপ দেখতে একুশে অনুসন্ধানী টিমের যাত্রা বিআরটিসির বিভিন্ন ডিপোতে। শুরুতেই কমলাপুর ডিপো। ক্যামেরায় ধরা পড়লো চিঠিটি। (স্ক্রীন সর্ট চিঠির)

কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা আছে জেনেও এবার যাই গাবতলী ডিপোতে। সম্প্রতি আনা বাসের ছাদ ফুটো হয়ে পানি পাড়ছে, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে চিঠিও দিয়েছেন ডিপো ম্যানেজার। এ ডিপোতে গত ১৬ এপ্রিল এবং ১০ মে দেয়া হয় আটটি নতুন বাস।  সব কটিতেই সমস্যা। বাসের মান নিয়ে নানা তথ্য জানিয়েছেন এখানকার কর্মীরা।

ডিপোর একপাশে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। পাশে নষ্ট বাস। ভারত থেকে আমদানি করা বাসে হার্ড বোর্ড লাগানো।

বাসগুলো বুঝে নেয়ার আগে কয়েক দফায়, ক্রয়-পূর্ব পরিদর্শন করেছিলেন বিআরটিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সরবরাহ প্ওায়ার পর এতো সমস্যা কেন। এ প্রশ্নের উত্তর আছে কি?

মিরপুর ডিপোতে পড়ে আছে দামি ভলভো গাড়ীগুলো। এগুলোর সেবা-কাল বিশ বছর। পাচঁ থেকে সাত বছরের মধ্যেই অকেজো। তেজগাও ট্রাক ডিপোতে আগে দেয়া শতাধিক ট্রাকের বেশীর ভাগই নষ্ট। এগুলো এখন একরকম বোঝা হয়েই দাড়িয়েছে।

শ্রমিকদের অভিযোগ, বকেয়া বেতনসহ বিআরটিসির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে যারাই আন্দোলন করেছেন তারাই কর্মকর্তাদের রোষানলের শিকার হয়েছেন।

তবে এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নেন সংস্থা প্রধান। জানান, সবকিছু খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তবে, বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামছুল হক।

সরকারি তহবিলের লুটপাটে জড়িতদের  বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার সময়। সরকার এদের বিরুদ্ধে  কঠোর হবে, এ প্রত্যাশা এ পরিবহন বিষেশজ্ঞের।