ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

বিশ্বকাপের ইতিহাসে রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৭ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার

১৯৭৫ সালের প্রথম বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ২০১৫ সালের একাদশ আসর পর্যন্ত ক্রিকেটে অনেক ইতিহাস ও ব্যতিক্রমী ঘটনার জন্ম হয়েছে।

কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে যত অঘটন হয়েছে তা ক্রিকেটের ইতিহাসে কখনো দেখেনি বিশ্ববাসী।

যার শেষ হয়েছে এবারের আসরের ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে। যা কল্পনাকেও হার মানায়। সত্যিই এক অবিশ্বাস্য ও রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া।

যেখানে ক্রিকেট স্বমহিমায় ভাস্বর। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটাই প্রথম ফাইনাল ম্যাচে টাইয়ের ঘটনা দেখলো ক্রিকেটপ্রেমিরা।

ফাইনাল ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৪১ রানে থেমে যায় নিউজিল্যান্ড। ২৪২ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপের মুখে পড়ে স্বাগতিকরা। ৯০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ইংলিশরা।

তবে সে চাপ সামলিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন জস বাটলার ও বেন স্টোকস। তীরে এসে বাটলার ফিরে গেলেও শেষ পর্যন্ত লড়ে যান স্টোকস।

গোটা ম্যাচটি এককভাবে কোন দলের পক্ষে ছিল না। কখনো স্বাগতিকদের পক্ষে, আবার কখনো পাল্লা ভারি হয়েছে কিউইদের দিকে। বিশেষ করে বাটলারকে ফিরে জয়ের স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে উইলিয়ামসনরা।

শেষ ওভারে ১৫ রানের প্রয়োজন ছিল। মনে হচ্ছিল শিরোপা কিউইদের হাতেই উঠছে। কিন্তু না, সকল অসম্ভবকে সম্ভব করে জ্বলে উঠেন অলরাউন্ডার বেন স্টোকস।

শেষ বলে গড়ায় ম্যাচ। ১ বলে দরকার ২ রান। বোল্টের বল ঠেলে দিয়েই ১ রান নিতে পারলেও, ২ রান নিতে গিয়ে রান আউটের শিকার হোন স্টোকস। এভাবে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার প্রথম স্তর শেষ হয় টাইয়ের মধ্যদিয়ে। ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনাল ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

সেখানেও দু’দলের রান সমান ১৫। ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হল বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে। সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড তোলে বিনা উইকেটে ১৫ রান।

স্টোকস ৮* ও বাটলার ৭*। নিউজিল্যান্ড ১৫/১। নিশাম ১৩, গাপটিল ১। এরআগে ইংল্যান্ডের ইনিংসের শেষ বলে মার্ক উড রানআউট হলে ম্যাচ টাই হয়।

রুদ্ধশ্বাস ফাইনালের পরতে পরতে মহাবিস্ময় ও নাটকীয়তা এই ম্যাচকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

কবে কোন বিশ্বকাপ ফাইনাল এমন মোহনীয় ও মাদকতাময় হয়েছিল, তা কেউ বলতে পারবে না। সহজ ম্যাচ মোটেও ছিল না এটি। ৪৪ বছরের ইতিহাসে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড দু’দলই বুভুক্ষু ছিল শিরোপার জন্য।

সুপার ওভারেও ম্যাচের নিষ্পত্তি না হওয়ায় গোটা ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। তাদের বাউন্ডারি ছিল ২৬টি। আর নিউজিল্যান্ডের ১৭টি। ট্রফির নিষ্পত্তি হয় এখানেই।

শ্বাসরুদ্ধকর এ ম্যাচে স্বাগতিকরা শিরোপা জিতলেও, নিউজিল্যান্ডের হতাশার কিছু দেখছেন না ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। কেননা, তারা মাঠের লড়াইয়ে হারেনি। হেরেছে আইসিসির নিয়মের কাছে।

তাই অনেকেই আইসিসির নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো ম্যাচে এ ধরনের নিয়ম কখনো থাকা উচিত নয়। মাঠের খেলাই এখানে মূখ্য বিষয় বলে উল্লেখ করেন অনেকে।

আই/