ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

অভিনেতা বুলবুল আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৩৪ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০২:০২ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার

তিনি ছিলেন মহানায়ক। ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইন্ডাস্ট্রিতে এই উপাধি একজনেরই। যিনি আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অন্তরে অমর হয়ে আছেন। তিনি অভিনেতা বুলবুল আহমেদ। ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই মহানায়কের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার। ২০১০ সালের আজকের এই দিনে তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।

মহানায়কের মৃত্যুবার্ষিকীতে দিনটি বিশেষভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে তার পরিবার। জানিয়েছেন বুলবুল আহমেদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা।

বুলবুল আহমেদ নেই ৯ বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেল। তাকে পাওয়া যাবে না কোনো আয়োজনে, প্রয়োজনে। এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং প্রবীণ বরণীয় শিল্পীদের স্মরণীয় করে রাখতে বুলবুল আহমেদের পরিবার ও বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশনের পক্ষে প্রতিবছর সম্মাননা দেওয়ার আয়োজন করা হয়। প্রয়াত এই অভিনেতার মৃত্যুবার্ষিকী সামনে রেখে গতকাল রোববার বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা পদক দেওয়ার আয়োজন করেছে বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশন। বর্ষীয়ান অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানকে বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা পদক দেওয়া হয়। প্রয়াত সহশিল্পীর স্মৃতি স্মারক পেয়ে আপ্লুত হন এ টি এম শামসুজ্জামান।

উল্লেখ্য, বুলবুল আহমেদের জন্ম ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকায়। তার আসল নাম তাবারক আহমেদ। আদর করে তার বাবা-মা বুলবুল বলে ডাকতেন। দাম্পত্য জীবনে বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তান হলেন- মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ। দারুণ মেধাবী ছিলেন বুলবুল। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করার পর তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন তিনি।

চাকরির পাশাপাশি বুলবুল আহমেদ টিভিতে অভিনয় শুরু করেন। বুলবুল আহমেদ অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ছিল আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় ‘বরফ গলা নদী’। এটি ১৯৬৪ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়। বুলবুল আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকগুলো হচ্ছে- মালঞ্চ, ইডিয়েট, মাল্যদান, বড়দিদি, আরেক ফাল্গুন, শেষ বিকেলের মেয়ে। ধারাবাহিক ও খণ্ড নাটক মিলিয়ে প্রায় চার শতাধিক নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সর্বশেষ টিভি নাটক ছিল ২০০৯ সালে শুটিং করা ‘বাবার বাড়ি’।

১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। এর পরের বছর আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘অঙ্গীকার’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। দুটি সিনেমা দিয়েই তিনি বাজিমাত করেন। তবে বুলবুল আহমেদ ঢাকাই সিনেমার দর্শকের কাছে চিরদিন শ্রদ্ধেয় হয়ে থাকবেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি দুই চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’- এ দুর্দান্ত রূপদান করে। ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’-এই দুটি চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সব শ্রেণির দর্শকের অন্তরে।

এছাড়াও ‘মহানায়ক’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্য্য কন্যা’ সিনেমাগুলোতে বুলবুল আহমেদ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়। বুলবুল আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ধীরে বহে মেঘনা, জীবন নিয়ে জুয়া, রূপালী সৈকতে, বধূ বিদায়, জন্ম থেকে জ্বলছি, দি ফাদার প্রভৃতি। বুলবুল আহমেদ অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিলো ‘দুই নয়নের আলো’।