ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৮ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯ বুধবার

২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

এতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। গত জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হযেছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে জুন পর্যন্ত অর্জন হয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রক্ষেপণ ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ।

কিন্তু গত জুন শেষে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এটি চলতি মুদ্রানীতির ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দুবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে। ছয় মাস অন্তর এ মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে প্রণয়ন হয়।

দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রার সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গভর্নর বলেন, আমাদের মুদ্রানীতি ঘোষণাপত্র অর্থবছরের দুই অর্ধের জন্য দুবারের বদলে অর্থবছরের শুরুতে সমগ্র বছরের জন্য একবার ঘোষণা করা হবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে দেশের মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান বলেন, প্রথাগতভাবে অর্থবছরের শুরুতে সমগ্র বছরের জন্য মুদ্রানীতি কার্যক্রম প্রণয়ন করা হয় এবং মধ্যবর্তীকালে যে কোনো সময়ে নীতি সুদহার ও নগদ জমার/তারল্যের বিধিবদ্ধ হারসমূহকে প্রয়োজনসাপেক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তন করে প্রকাশ করা হয়। সুতরাং অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য আলাদাভাবে মুদ্রানীতি ঘোষণার বিশেষ কোনো তাৎপর্য বহন করে না।

 ড. সালেহ উদ্দিন গভর্নর থাকার সময় ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথমবারের মতো অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। এর আগে বছরে একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা হত।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনের গভর্নর জানান, মুদ্রানীতিভংগী ও মুদ্রানীতি কর্মসূচি নিয়ে সমগ্র জনগোষ্ঠির ধারণা ও প্রত্যাশার উন্নততর চিত্র পেতে এখন থেকে মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে অর্থবছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে রাজধানী ছাড়াও বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যাপকতর পরিসরে বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসংশ্লিষ্ট মহলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ সভার আয়োজন করা হবে।

মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর এসএম মুনিরুজ্জামান, আহমেদ জামাল, পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমী, বিআইএফইউর প্রধান আবু হেনা মো. রাজি হাসান, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এসকে সুর চৌধুরী, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো. আখতারুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরকে/