ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাকে কামড়ে পেঁচিয়ে ধরল শিশুর গলা, বাবাকেও ছাড়ল না ভয়ঙ্কর ‘কালাচ’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৫ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯ বুধবার

মা-বাবার পাশে বেঘোরে ঘুমিয়ে ছিল দেড় বছরের শিশুটি। সেই শিশুর গলা পেঁচিয়ে ধরে ফণা তুলেছিল ‘কালাচ সাপ’। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ছোবল খান বাবা। তাঁর শিশুটির মাকে ছোবল মারে সাপটি। সোমবার রাতে এমনই এক লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে ভারতের ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়ায়।

জানা গছে, সাপের কামড় খাওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে দেখা যায়, বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শিশুটির মা। তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানা যায়, তাকে কামড়ানোর পরই সাপটি গিয়েছিল ঘুমন্ত শিশুর কাছে।

মোহন ও শিখা হেমব্রম নামে বেলিয়াবেড়ার চৈনিশোল গ্রামের ওই দম্পতি তাদের দেড় বছরের ছেলে সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে মানিককলের ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

চিকিৎসকেরা জানান, শিখাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা দেরি হয়েছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মায়ের স্তন্যপান করায় শিশুকেও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বুধবার হাসপাতালে শিশুটির বাবা মোহন জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমাতে গিয়েছিলেন তারা। মশারিও টাঙিয়েছিলেন। হেমব্রম দম্পতির দুই ছেলে তিন বছরের সাগুন ও দেড় বছরের মানিক শুয়েছিল বাবা-মায়ের মাঝখানেই। 

মোহন বলেন, মাঝরাতে স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি স্ত্রী ভয়ে কাঁপছে। অঘোরে ঘুমাচ্ছে সাগুন ও মানিক। কিন্তু মানিকের গলায় পেঁচিয়ে ফণা তুলে আছে একটা সাপ।

মোহন আরও জানান, ছেলেকে বাঁচাতে সাপের মাথা ধরতে যান মোহন। তখন তাকে ছোবল মারে সাপটি। তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে সাপ মেরে হাসপাতালে নিয়ে যান মোহনকে।

এদিকে মঙ্গলবার ভোর রাতে শিখার পেট ও গলা যন্ত্রণা করতে থাকলে তার শ্বশুর দুই নাতি ও বউমাকে নিয়ে হাসপাতালে যান। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এ ভর্তি করানো হয় শিখাকে। 

হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। তবে তিন দিন না গেলে এই তিন জনের সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়। 

সর্প বিশেষজ্ঞ তথা কেশপুর কলেজের প্রাণিবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান সুমন প্রতিহার আক্রান্তের উপসর্গের কথা জেনে বলেন, সম্ভবত সাপটি ‘কালাচ’ (কমন ক্রেট)। এই সাপ মূলত ঘুমন্ত মানুষকে ছোবল মারে। আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় বুঝতেই পারেন না যে, তাকে সাপে ছোবল মেরেছে। পরে শুরু হয় পেট ব্যথা, গলা ব্যথা কিংবা সারা শরীর জুড়ে অস্বস্তি। সময় মতো চিকিৎসা শুরু না হলে মৃত্যু অবধারিত।

এদিকে শচীন বাস্কে নামে একজন প্রতিবেশী জানান, শিখাকেও যে সাপ কামড়েছে সেটা ঘুর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি কেউ।
 
এনএস/এসি