ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

৩ ভাগ হচ্ছে কাশ্মীর!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৫৩ পিএম, ৫ আগস্ট ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০২:০৬ পিএম, ৫ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

ভারত শাসিত কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দিল কেন্দ্র। ফলে বিশেষ সুবিধা হারালেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা। এর মধ্য দিয়ে ২টি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলো জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ।

সোমবার জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ এর বিরোধিতায় রাজ্যসভায় চলে তুমুল হাই হট্টগোল। হই হট্টগোলের মধ্যে খুব অল্প সময়ের বিল পাস হয়ে যায়। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন রাষ্ট্রপতি।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, এই বিলের মাধ্যমে কাশ্মীরকে পুনর্গঠন করা হবে। তিনটি ভাগে ভাগ করা হবে কাশ্মীরকে। ১. লাদাখ, ২. জম্মু ও ৩. কাশ্মীর। 

জম্মু-কাশ্মীর আর আলাদা করে রাজ্যের মর্যাদা পাচ্ছে না। জম্মু কাশ্মীরে এবার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব দেওয়া হয়। লাদাখকে জম্মু কাশ্মীর থেকে আলাদা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে লাদাখে বিধানসভাবিহীন। 

এদিন রাজ্যসভায় যা ঘটল, তা ‘নজিরবিহীন’। কারণ সংসদের ‘লিস্ট অফ বিজনেস’ এ এই প্রস্তাব ছিল না। পরে ‘রিভাইজড লিস্ট অফ বিজনেস’ এ এই প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। রামগোপাল যাদব, গোলাম নবি আজাদরা কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। 

এদিন ৩৭০ ধারা বিল পাস হওয়ার পরই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধীরা। ‘রুল বুক’ নিয়ে চেয়ারম্যানের টেবিলের কাছে পৌঁছে যান ডেরেক ও’ব্রায়েন। তার অভিযোগ, এত কম সময়ে যে বিল সার্কুলেট হয়নি, সেটি কীভাবে টেবিল হয়ে যাচ্ছে? সেটি কীভাবে রাজ্যসভায় পাস করে দিলেন অমিত শাহ?

কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন মেহবুবা মুফতি। ‘আজকের দিন গণতন্দ্রের সবচেয়ে কালো দিন’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। 

গোটা রাজ্যে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। ইতিমধ্যেই নিজের  বাসভবনে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক শেষ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হওয়া বিশেষ ক্যাবিনেট বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঠিক কী সিদ্ধান্ত নেন, তা জানতে উদ্বেল ছিল গোটা রাজ্য।

এর আগে রোববার রাতে কাশ্মীরের পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠে। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানাচ্ছে।

বিপুল আধাসেনা নামানোর পর রাজধানী শ্রীনগর আর জম্মু অঞ্চলে ১৪৪ ধারা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

মধ্যরাতে হঠাত করেই গৃহবন্দি করা হল দুবারের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাকে। শুধু তাই নয়, গৃহবন্দি করা হয়েছে রাজ্যের একাধিক নেতাকে।

বাতিল করা হয়েছে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা। বন্ধ কেবল টিভি পরিষেবাও। একই সঙ্গে সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এ এন আই জানাচ্ছে, ‘শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে যে বিপদ তৈরি হয়েছে’, সে কারণে জম্মু জেলাতেও সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১৪৪ ধারায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

জম্মু এবং উধমপুর এই দুই জেলার ডেপুটি কমিশনার সুষমা চৌহান এবং পীযূষ সিংলা বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বার্তার মাধ্যমে জানিয়েছেন, বাড়তি সতর্কতার স্বার্থে সমস্ত স্কুল, কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।