ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যা করবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২০ এএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার

ওয়ার্ল্ড হেল্‌থ অর্গানাইজেশন (হু) থেকে শুরু করে ল্যানসেট জার্নালের পরিসংখ্যানে কোন তফাৎ নেই। প্রত্যেকেরই মতে বিশ্বে প্রতি দশটি মৃত্যুর একটি হয় স্ট্রোকের কারণে। শুধু তাই নয়, ২০১৭ থেকে ২০১৯-এর মার্চ মাস পর্যন্ত এই কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে এশিয়ার নানা দেশে। 

কয়েক বছর আগে বিশ্বের ৩২টি দেশের উপর সমীক্ষা চালায় আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন। স্ট্রোকের জন্য মূল ১০টি কারণকে চিহ্নিত করেন তাদের গবেষকরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, স্ট্রোক সব সময়ই যে মৃত্যু ডেকে আনে এমন নয়। বরং স্ট্রোক হলে পঙ্গুত্বের আশঙ্কা বেড়ে যায়। নিয়মিত চেকআপ ও বাড়তি কিছু সতর্কতা মেনে দৈনন্দিন কাজকর্মে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারলেই তবে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।

এবার জানুন স্ট্রোক কী?

অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের উপর নির্ভর করেই প্রতিটি কোষ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সারে। আমাদের মাথার কোষগুলোও এমন স্বভাবের। অথচ মস্তিষ্কের রক্ত বহনকারী ধমনীর পথ বন্ধ হয়ে গেলে বা সরু হয়ে গেলে রক্ত আর সে পথে চলাচল করার মতো অবকাশ পায় না। অনেক সময় সেখানে চর্বি জমেও এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। তখনই মস্তিষ্কের কোষগুলো প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে নেতিয়ে পড়ে অকেজো হয় ও স্ট্রোকের শিকার হতে হয়।

চিকিৎসকদের মতে, রক্তচাপ, ডায়াবিটিস ও শরীরচর্চার অভাবে এই প্রবণতা বাড়ে। বরং কিছু নিয়ম মেনে চললে স্ট্রোকের এই রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোকে সহজেই জয় করা সম্ভব। এছাড়া স্ট্রোক রোখার নানা কার্যকরী উপায়ও রয়েছে।

প্রতিদিনের অভ্যাস বদল থেকে শুরু করে অসুখ কমানোর নানা হাতিয়ারে জোর দিলেন চিকিৎসকরা। যেমন-

* ওজন কিছুতেই বাড়তে দেওয়া যাবে না। ওজন যত কমবে, অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও ততটাই কমবে। তাই ডায়েট মেনে, ব্যায়াম করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

* শরীর চর্চার সময় খুব একটা না পেলে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করুন। একটানা রাস্তা ধরে, দ্রুত পায়ে ঘাম ঝরিয়ে হাঁটুন। পেটের মেদ যাতে না জমে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে কোন ফিটনেস ট্রেনারের পরামর্শ নিয়ে নিজের ব্যায়ামের রুটিনটা সাজিয়ে নিন।

* পর্যাপ্ত পানি খাওয়া খুব প্রয়োজন। শরীরে কখনওই অক্সিজেনের ঘাটতি হতে দেবেন না। শরীর অনুযায়ী আপনার কতখানি পানি খাওয়া প্রয়োজন, তা জেনে নিন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে। সেই অনুপাতে পানি পান করুন। 

* ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলেই কোলেস্টেরল বাড়বে, মেদও বাড়বে। কাজেই ঘুমের সঙ্গে আপস করবেন না।

* রক্তচাপ ও ডায়াবিটিস থাকলে নিয়ম করে তা চেকআপ করুন। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে মাসিক চেকআপ না করিয়ে অনেকেই একটানা ওষুধ খেয়ে যান। অন্তত দু’মাস অন্তর এই বিষয়গুলো চেকআপ করিয়ে নিন। প্রয়োজনে ওষুধের মাত্রা বাড়তে-কমতে পারে।

* রোদে বেরলে ছাতা, সানগ্লাস ব্যবহার করুন। সঙ্গে রাখুন পানির বোতল।

* আচমকা অজ্ঞান হয়ে পড়লে বা মাথা ঝিমঝিমের সঙ্গে শরীরের কোনও অংশ অবশ হয়ে গেলে, জিভ এলিয়ে চোখে অন্ধকার দেখলে ঝুঁকি নেবেন না। এ সময় ঘাড়ে-মাথায় পানি দিন। পানি দিন রগ ও কানের দু’পাশেও। এর সঙ্গে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াও খুবই জরুরি।

এএইচ/