ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

যে গ্রামে পুত্রসন্তানের জন্ম হয় না

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৯ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৯ রবিবার

পোল্যান্ডের ছোট্ট একটি গ্রাম মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকিয়ে। ১৯৪৫ সালের আগে এই গ্রামটি ছিল জার্মানির অংশ। তখন এর নাম ছিল ‘মিসটিটজ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে গ্রামটি পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়। বিস্ময়জনক ঘটনা হচ্ছে গত এক দশকে এই গ্রামটিতে জন্ম নেয়নি কোন পুত্রসন্তান।

পোল্যান্ডের এই গ্রামটিতে বাস করে ৩০০ জন মানুষ। তাদের রয়েছে ৯২টি বাড়ি। ২০১০ সালের পর থেকে এই গ্রামবাসীরা কোনো সদ্যোজাত শিশুপুত্রের কান্না শোনেনি। গ্রামবাসী থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত কেউ ভেবে পান না এর কুলকিনারা। ভেদ করা যায়নি প্রকৃতির এই রহস্য।

অথচ সার্বিকভাবে পোল্যান্ডে পুত্রসন্তানের জন্মহার বেশি। ২০১৭ সালে ২ লাখ ৭ হাজার পুত্রসন্তানের জন্ম হয়েছে এই দেশটিতে। কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার। কিন্তু সারাদেশের এই ধারা ওলটপালট হয়ে গেছে এই প্রান্তিক গ্রামটিতে।

গত ১০ বছরের হিসাবটা চোখে পড়ার মতো হলেও এই গ্রামে পুত্রসন্তানের জন্মহার কন্যাসন্তানের চেয়ে চিরকালই অনেকটা কম। মেয়েদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই গ্রামে সব পেশাতেই স্বাভাবিকভাবে নারীশক্তির প্রাধান্য। মাঠে কৃষিকাজ থেকে দমকল বাহিনী সর্বত্র নেতৃত্বে মেয়েরাই।

কিন্তু গ্রামবাসীদের মতে এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তারা ‘পুরুষালি’ কাজে চাইছেন পুরুষকর্মীই। তারা মনে করছেন এর জন্য বিঘ্নিত হচ্ছে কাজের গুণগত মান।

দক্ষিণ পশ্চিম পোল্যান্ডের এই গ্রাম সদ্যোজাত পুত্রসন্তানের মুখ দেখার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষায়। গ্রামটির মেয়র ঘোষণা করেছেন, যে দম্পতি পুত্রসন্তান উপহার দেবেন, তাদের জন্য থাকবে  বিস্ময়কর উপহার। পাশাপাশি নবজাতকের নামে গ্রামের একটি রাস্তার নামকরণ করা হবে। তার জন্ম উপলক্ষে বপন করা হবে ওক গাছ।

গ্রামবাসীরা আশঙ্কা করছেন, এই জন্মহার চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দেখা দিতে পারে আরও একটি সমস্যা। তাহলো মেয়েদের বিয়ের জন্য গ্রামে পাত্র পাওয়া যাবে না।

এএইচি/এসি