ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষনের অভিযোগ 

আজমীর হোসেন তালুকদার, ঝালকাঠি

প্রকাশিত : ১১:২২ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ১১:২৪ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৯ রবিবার

ঝালকাঠি সদর উপজেলার তেরআনা শাহমাহমুদিয়া আলিম মাদ্রাসা সুপার ও জামায়াত নেতা এসএম কামাল উদ্দিন খন্দকারের (৫৫) বিরুদ্ধে একই মাদ্রাসার ৮ম শ্রেনির এক কিশোরীকে  ধর্ষনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাদ্রাসা সুপার কামাল উদ্দিনের বাসায় কাজের বিনিময়ে থাকতেন ওই ছাত্রী।  এদিকে কিশোরীকে ধর্ষনের পর তার মেজভাই জামাল উদ্দিনের ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ  উঠেছে। পরে শনিবার রাত ১০টায় ঝালকাঠি থানার ওসি তদন্তের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেই ঘর থেকে ছাত্রীটিকে বের করে।

খবর পেয়ে পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ হেফাজতে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকে বিতর্কিত মাদ্রাসা সুপার ও জামায়াত নেতা কামাল উদ্দিন, তার স্ত্রী ও ৫ সন্তানসহ পলাতক রয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে কামিল উদ্দিন নিজ বাড়ীতে আশ্রীতা ঐ ছাত্রীকে ধর্ষন করেন। এ সময় তার স্ত্রী দেখে ফেলে ডাকচিৎকার দেয় ও স্বামী কামিল উদ্দিনসহ ধর্ষিতা কিশোরীকে জুতাপেটা করলে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষক কামাল উদ্দিন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গা ঢাকা দেয়। এমন কি তার নির্দেশে মেজভাই জামাল উদ্দিন ধর্ষিতা কিশোরীকে তার বাড়ীতে নিয়ে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখে। পরে খবর পেয়ে শনিবার রাতে ধর্ষিতা মেয়েটিকে ধর্ষক কামালের মেঝ ভাইয়ের ঘর থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। দরিদ্র মেয়েটি নিজ বাসায় আশ্রয় দেয়ার সুবাধে দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসা সুপার কামাল উদ্দিন স্ত্রীর চোখ ফাঁকি দিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষন করে আসছিলো বলে এলাকাবাসী আরো জানায়। 

ধর্ষিতা ছাত্রীকে উদ্ধার করা ঘরের মালিক ও সুপারের ভাই জামাল উদ্দিন জানায়, বড়ভাই কামাল উদ্দিনের ধর্ষনের বিষয়ে সে কিছুই জানেনা। শুক্রবার বড়ভাই তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে শ্বশুর বাড়ী বেড়াতে যাওয়ার পূর্বে তাদের বাসার আশ্রিতা কিশোরী মেয়েটিকে তার ঘরে রেখে যায়। তিনি পার্শবর্তী এলাকায় একটি মুদীদোকান পরিচালনা করায় ঘরের বাহিরে থাকায় নিজ স্ত্রীর সাথে মেয়েটিকে রেখে নিরাপত্তার স্বার্থে বাহির থেকে তালা দিয়ে রাখেন।

এ ব্যাপারে অভিযানে অংশ নেয়া ঝালকাঠি থানার ওসি তদন্ত ও ওসি অপারেশন শোনিত কুমার গাইন জানায়, মাতৃহীন দরিদ্র পিতার সন্তান মেয়েটিকে ৪/৫ বছর পূর্বে মাদ্রাসা সুপারের বাসায় এনে রাখে। এখানে কয়েক বছর ধরে সুপার কামাল উদ্দিন তাকে যৌন নির্যাতন করে আসছে। এ বিষয় নারী নির্যাতনের মামলা রের্কড হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, তেরআনা মাদ্রসার সুপার এসএম কামাল উদ্দিন খন্দকারের বিরুদ্ধে ধর্ষনের বিষয়ে আমরা এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তবে তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মাদ্রাসার তহবিল তশরুপসহ নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।  এসব অভিযোগে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং এবিষয়ে তদন্তও চলমান রয়েছে।

এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মাদ্রাসা সুপার কামাল উদ্দিন জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও বর্তমান সরকারের আমলেও অত্যন্ত প্রভাবশালী অবস্থানে থাকায় পুরো এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলার সাহস রাখেনা। 

এ ব্যাপারে কামাল উদ্দিনের মোবাইল ফোনে কয়েক বার ফোন করলেও তার সেল ফোন বন্ধ পাওয়া  যায়। এদিকে মাদ্রাসা সুপার কতৃর্ক নিজ ছাত্রীকে ধষনের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

এনএম