ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

কাশ্মীরে মানবাধিকার পুরোপুরি লঙ্ঘিত: মমতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:০০ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ‘বিশ্ব মানবিকতা দিবস’ উপলক্ষে টুইট করলেন তিনি। সেখানেই জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে আক্রমন করে বসলেন কেন্দ্রকে। কাশ্মীরের মানুষদের অধিকার পুরোপুরি ভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে— লিখলেন মমতা। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই টুইটের তীব্র নিন্দা করছে বিজেপি। কাশ্মীরকে কি সম্পূর্ণ রূপে ভারতের অংশ হিসেবে দেখতে চান না মমতা? প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। খবর আনন্দবাজারের

এ দিন সকাল ৭টা ২ মিনিটে টুইটটি করেছেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটের প্রথম অংশে তিনি লিখেছেন, ‘‘আজ বিশ্ব মানবিকতা দিবস। কাশ্মীরের মানুষদের অধিকার পুরোপুরি ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। আমরা সবাই কাশ্মীরের মানবাধিকার ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করি।’’

মানবাধিকারের প্রশ্নে তিনি কোনও দিনই আপস করেননি, এমন বার্তাও এ দিন দিতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটের দ্বিতীয় অংশে তিনি লিখেছেন, ‘‘মানবাধিকার রক্ষা আমার হৃদয়ের অত্যন্ত কাছের বিষয়। ১৯৯৫ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং লক-আপে মৃত্যুর প্রতিবাদে আমি ২১ দিন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছি।’’

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিলোপ ঘটিয়ে সে রাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়ার বিল সংসদে পাশ হওয়ার পরেই তার বিরোধিতায় মুখ খুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তার দল তৃণমূল সংসদের দুই কক্ষেই সরব হয়েছিল সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতায়। বিলের উপরে ভোটাভুটিতে অংশ না নিয়ে রাজ্যসভা এবং লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেছিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বার বার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছিলেন মোদীর সরকারকে। ওমর আবদুল্লা বা মেহবুবা মুফতিদের আটকে রাখার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। সংসদে বিল পাশ করানোর পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ বার ফের টুইটারে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন এবং কাশ্মীরের বাসিন্দাদের মানবাধিকার সম্পূর্ণ ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে দাবি করলেন।

মমতার এই টুইটের তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি। দলের রাজ্যসভা সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কী বলতে চাইছেন, সেটা একটু স্পষ্ট করে বললে ভাল হয়। উনি কি কাশ্মীরকে পুরোপুরি ভারতের অঙ্গ হিসেবে দেখতে চান না? যদি না চান, তা হলে স্পষ্ট করে বলে দিন। সবারই বুঝতে সুবিধা হবে যে, তিনি ঠিক কী চাইছেন।’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে যে সব কথা বলছেন, তা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্যের সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে বলে স্বপন দাশগুপ্ত মনে করছেন। পুলওয়ামা হোক, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক, বালাকোটের এয়ার স্ট্রাইক হোক বা এখন জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ— প্রতিটি ক্ষেত্রেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান মিলে যাচ্ছে পাকিস্তানের সঙ্গে। এমনটাই মনে করছেন বিজেপি সাংসদ। 

মমতার এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির কথা মাথায় রেখে— বলছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। অত্যন্ত দায়িত্বশীল একটি সাংবিধানিক পদে থাকা একজন ভারতীয় রাজনীতিক যখন কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের সুরে কথা বলেন, তখন আন্তর্জাতিক মহলের কাছে কী বার্তা যায়? প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।

এসি