ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইউরিক অ্যাসিড এবং কোলেস্টেরল কমাবেন যেভাবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩৭ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

কোরবানির ঈদ আসলে খাবার টেবিলে গরু বা খাসির গোস্ত একটু বেশিই থাকে। নিজের বাড়িতো বটেই কারো বাড়িতে সৌজন্য সাক্ষাত বা দাওয়াতে গেলেও একই অবস্থা। তবে রেড মিট খুব বেশি খেলে তা নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত জটিলতা তৈরি করার সম্ভাবনা থাকে।

বেশি 'রেড মিট' খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে

প্রাভা হেলথ নামে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পুষ্টিবিদ নূর-ই-জান্নাত ফাতেমা বিবিসি বাংলাকে বলছেন, অতিরিক্ত গরু বা খাসির মাংস একজন সুস্থ সবল মানুষের শরীরেও নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে।

তিনি বলছেন, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি দৈনিক ৪০ গ্রাম পর্যন্ত গরুর মাংস খেতে পারেন। অর্থাৎ দুই ইঞ্চি সমপরিমাণ দুই টুকরো।

কিন্তু কুরবানি ঈদের মৌসুমে তো বটেই এমনকি সাধারণ সময়েও অনেকে এই পরিমাণের অনেকগুণ বেশি খেয়ে থাকেন।

জান্নাত ফাতেমা বলছেন, কুরবানির মৌসুমে যে পরিমাণ সাধারণত খাওয়া হয় এতে করে একজন সুস্থ লোকেরও কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে, উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।

এমন মাংসে সোডিয়ামের পরিমাণও বেশি থাকে। প্রাণীজ প্রোটিনে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গিয়ে গিটে ব্যথা হতে পারে।

এতে কিডনির উপরও চাপ পড়ে। রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে 'ট্রান্স ফ্যাট' থাকে। বেশিরভাগ সময় পেটের দিকে গিয়ে এসব চর্বি জমে যায়।

বেশি গরুর মাংস হজমে সমস্যা করে, গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো বিরক্তিকর সমস্যা হতে পারে।

যাদের পাইলস রয়েছে তাদের জন্যে সমস্যা আরও বেশি হতে পারে।

যেভাবে রান্না করবেন

নূর-ই-জান্নাত ফাতেমা বলেছেন কম বয়সী গরুর মাংস অপেক্ষাকৃত ভালো। মাংস কীভাবে রান্না হচ্ছে সেটিও একটি বিষয়। কম তেলে রান্না করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।

গরু বা খাসির মাংসে অনেক সময় এমনিতেই চর্বি জাতীয় উপাদান বেশি থাকে। তাই রান্নায় বাড়তি ঘি ব্যাবহার নিরুৎসাহিত করছেন তিনি। কারণ এতে চর্বির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।

প্রতিকারের উপায় কী?

কিন্তু যদি বেশি খেয়েই ফেলেন বা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে বেশ কিছু উপায় জানালেন জান্নাত ফাতেমা।

১. খাবারের মেন্যুতে প্রচুর পরিমাণে সালাদ ও সবজি জাতীয় খাবার রাখতে হবে। শর্করা কম খেতে হবে।

২. মাংস খাওয়ার পর এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে একটু লেবু চিপে দিয়ে সেই পানি ধীরে ধীরে খান তাতে চর্বি কমবে।

৩. টক দই দিয়ে লাচ্ছি খেতে পারেন। টক দই চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

৪. ইউরিক অ্যাসিড বা কোলেস্টেরল হঠাৎ বাড়লে সকালবেলা এক চা চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার একটু পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। আজকাল ঢাকার বড় সুপার শপে এটি পাওয়া যায়। এটি ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে।

৫. দিনে ৪৫ মিনিটের মতো ব্যায়াম করুন। অথবা হাটতে পারেন। বাইরে বের হতে না পারলে ঘরের মধ্যেও ১০ থেকে ১৫ মিনিট দ্রুত পায়চারি করতে পারেন। যোগ ব্যায়ামও ভালো কাজে দেয়।

৬. কুসুম গরম পানি পান করুন। তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানি পান করুন।

রাতারাতি সমাধান হবে না

তবে মনে রাখবেন রাতারাতি চর্বি কমে তলপেট আকর্ষণীয় হয়ে যাবে তেমনটা ভাবলে কিন্তু চলবে না। এসব প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।

আর যাদের এমনিতেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, হৃদযন্ত্রের ও ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত রেড মিট যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া।

এসি