ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১২ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৯ শনিবার

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মারা গেছেন। শুক্রবার রাত পৌনে আটটায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৯৭ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একমাত্র জীবিত সদস্য ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম হারুন তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক প্রফাইলে লেখেন, ‘স্কুলে পড়ার সময়ই এই মানুষটির দলে নিজের নাম লেখাই। দলের নাম ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। মার্কা কুঁড়েঘর। একেবারে ফরম পূরণ করে সদস্য হই। পারিবারিক পত্রিকা সংবাদ-এর পাশাপাশি বাড়িতে তখন আরেকটি পত্রিকা আসত। এর নাম 'নতুন বাংলা'। ন্যাপের দলীয় পত্রিকা। 'উদয়ন' নামে আরেকটি পত্রিকা অবশ্য নিজে রাখতাম। এসএসসি শেষ। অবসরে কী করবো? আমার কাকা আবু লায়েছ সরকার বললেন, ‘সপ্তাহখানেকের একটি ট্রেনিং আছে, যাবি নাকি? আরও ২০-৩০ জন যাবে।' 

বাড়ির বাইরে বের হতে পারবো-এই সুখে সঙ্গে সঙ্গেই রাজি। চলে এলাম একেবারে নারায়ণগঞ্জ। জেলার মদনপুর। ন্যাপের ট্রেনিং সেন্টার 'সামাজিক বিজ্ঞান পরিষদ'। চার দিন টানা ট্রেনিং। অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, আহমেদুর রহমান আজমী,ডা.আব্দুল ওয়াদুদ, জামালউদ্দিন সিরাজী ছিলেন প্রশিক্ষক। পার্টির স্টুডেন্ট উইং 'ছাত্র সমিতি' থেকে কলেজ সংসদে নির্বাচন করে বিশাল ব্যবধানে ফেল করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ছাত্র সমিতির এক মহসিন সরকার ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পাইনি। সেই যে বিচ্ছিন্ন হলাম,আর কখনো এই পার্টিমুখো হইনি। কিন্তু অনুভব করি যে মানুষের প্রতি ভালোবাসার দায় তৈরির ব্যাপারটা আমার চরিত্রে ঢুকিয়েছেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ। 

বাংলার ইতিহাস আপনাকে বাদ দিয়ে লেখা যাবে না জনাব মোজাফফর। ধর্মকর্ম সহ সমাজতন্ত্র আপনি কায়েম করে যেতে পারেননি,কিন্তু লড়াইটা আপনি চালিয়ে গেলেন আজীবন। নীতিবিচ্যুত হয়ে মন্ত্রী হওয়ার প্রলোভন, এমনকি সেদিনও স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে আপনি দেখিয়ে গেলেন অন্যদের সঙ্গে আপনার পার্থক্য। আজ আপনি চলে গেলেন। শ্রদ্ধা কমরেড। আমি বিশ্বাস করি আপনি চিরঞ্জীব।’

সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ তার টাইম লাইনে লেখেন,  ‘‘ধর্ম, কর্ম, সমাজতন্ত্র’- এর প্রবক্তা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম রূপকার, মুজিব নগর সরকারের উপদেষ্টা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই। বয়োবৃদ্ধজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। আজ ২৩ আগস্ট শুক্রবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ আমাদের ছেড়ে তিনি চিরদিনের জন্য ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।’ 

এমএস/এসি