ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

ডিসি অফিসে চলত লাল-সবুজ বাতির খেলা!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০২ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

জামালপুরের বিতর্কিত সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। নানা আলোচনা আর সমালোচনা চলতে থাকে দেশজুড়ে। 

আলোচিত সেই ভিডিওতে যে কক্ষটি দেখা গেছে সেটিকে ডিসির কার্যালয় সংলগ্ন খাস কামরা বলে চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশের অনেক সরকারি দপ্তরেই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিশ্রাম নেয়ার জন্য খাস কামরার বন্দোবস্ত আছে। ভিডিওর শেষ পর্যায়ে খাস কামরার বিছানায় দুজনকে অন্তরঙ্গ মূহুর্তে দেখা যায়। 

একটি সূত্রে জানা যায়, অফিস চলাকালীন সময়ে তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড অবাধে করতে সেই কামরার দরজায় বসানো হয়েছিল লাল ও সবুজ বাতি। অবৈধ কাজ চলাকালে লালবাতি জ্বলে উঠতো। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো বিশ্বস্ত পিয়ন। এই সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার জন্য প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কবীর পরিপাটি হয়ে যখন চেয়ারে বসতেন তখন সবুজ বাতি জ্বলে উঠলে তার কক্ষে প্রবেশের অনুমতি পেতেন অপেক্ষমান কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, প্রতিদিনই নাকি এমন লাল-সবুজ বাতির খেলা চলত ডিসি অফিসে। 

এ পরিস্থিতিতে জামালপুর জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট নন সাধারণ মানুষ। শুধু ওএসডি নয়, তদন্ত সাপেক্ষে  আরো বড় ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে অনেকেই মনে করেন। এছাড়া ওই ঘটনার সাথে জড়িত সাধনারও শাস্তির দাবি জানান সাধারণ মানুষ।  

এদিকে আজ সোমবার থেকে অফিস শুরু করেছেন বিতর্কিত সেই নারী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা। তার অফিসে আগমন উপলক্ষে ডিসি অফিসের বাইরে ভিড় করছেন সংবাদকর্মী ও উৎসুক জনতা। সেই ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা। 

 ওই ঘটনার পর থেকে সাধনাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া না গেলেও হঠাৎ করে আজ সোমবার সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলা প্রশাসকের অফিসে হাজির হন তিনি।

এদিন সকালে বোরখা এবং হিজাব পরিবর্তন করে হঠাৎ করে অফিসে হাজির হন। এ সময় তার হাতে একটি ছুটির দরখাস্ত দেখা যায়। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অফিসে হাজির হলেও সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি সাধনা। 

এ সময় সাধনা সাংবাদিকদের নিকট আকুতি-মিনতি করে জানান, ‘আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে বাঁচান। এসব কিভাবে হল আমি কিছুই জানি না। 

বিচার চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাধনা বলেন, আমি বিচার চাই তবে স্যারের কোনো দোষ নাই। 

এরপর সাধনা অফিসে একটি ছুটির দরখাস্ত দিয়ে চলে যান।

এরআগে ওই ঘটনার ভিডিও প্রকাশের পর গত শনিবার আহমেদ কবীরকে ওএসডি করার সিদ্ধান্তের কথা জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এরপর রোববার আহমেদ কবীরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এদিনই পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হককে জামালপুরের নতুন ডিসি নিয়োগ দেয়া হয়।