ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিলেন অপকর্মে লিপ্ত সেই নারী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০৯ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৮:৩৯ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

জামালপুরের ডিসির সাথে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া অফিস সহায়ক সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা তার কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে অসুস্থতার কারণে দেখিয়ে ছুটি নিয়েছেন। আজ সোমবার সকালে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এসে তিনি নিজেই ছুটির আবেদন করেন। এসময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

অফিস সহায়কের ছুটির আবেদন পত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার বলেন, সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা নামের ওই অফিস সহায়কের ছুটির আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন জেলা প্রশাসক কর্মস্থলে যোগদান করে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এ ঘটনায় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত সাপেক্ষে ওই অফিস সহায়কের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সে সময় ওই নারীর হাতে শারীরিক অসুস্থতার কারণে একটি ছুটির আবেদন পত্র দেখা যায়। আবেদনে অফিস চলাকালীন সময়ে অসুস্থ বোধ করায় আগামীকাল ২৭ আগস্ট থেকে ৩ দিনের ছুটির কথা উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসকের গোপনীয় শাখার অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ওই নারী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই কেউ কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই দ্রুত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন ওই নারী।

 আজ হঠাৎ করে আজ সোমবার সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলা প্রশাসকের অফিসে হাজির হন তিনি। সকালে বোরখা এবং হিজাব পরিবর্তন করে হঠাৎ করে অফিসে হাজির হন। এ সময় তার হাতে একটি ছুটির দরখাস্ত দেখা যায়। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অফিসে হাজির হলেও সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি সাধনা।

আপত্তিকর ভিডিও  বিষয়ে জানতে চাইলে সানজিদা ইয়াসমিন সাধনার  সাংবাদিকদের বলেন, এসব কিভাবে হল আমি কিছুই জানি না। ‘আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে বাঁচান। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাধনা বলেন, আমি বিচার চাই তবে স্যারের কোনো দোষ নাই। এরপর সাধনা অফিসে একটি ছুটির দরখাস্ত দিয়ে চলে যান।

এরআগে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর ও অফিস সহকারী সানজিদা আফরিন সাধনার আপত্তিকর ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ডিসি আহমেদ কবীরকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে এবং মো. এনামুল হককে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট বিকেলে ‘খন্দকার সোহেল আহমেদ’ নামের একটি পাবলিক ফিগার ফেসবুক পেজ থেকে জেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চপদধারী এই সরকারি কর্মকর্তা তার অফিসেই একজন নারীর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়। ফেসবুক আইডি থেকে এটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ব্যাপক হারে নজরে আসতে থাকে ফেসবুক আইডি ব্যবহারকারীদের কাছে। এদিকে শুক্রবার ভোররাত থেকে রহস্যজনক কারণে ওই আইডির ওয়াল থেকে ভিডিও লিংকটি সরিয়ে নেয়ায় সন্দেহ আরো দানা বেঁধে উঠেছে।

এমন ভিডিও প্রকাশ পাওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ওই ভিডিওটিতে যে কক্ষটি দেখা যাচ্ছে সেটি জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের অফিস কক্ষে তার চেয়ারের ঠিক ডান পাশের ছোট একটি কক্ষ। ছোট এই কক্ষটিতে একটি ছোট খাট বসানো হয়েছে। কক্ষটি বেশ পরিপাটি দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটিতে পুরুষ ব্যক্তিটিই জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। আর যে নারীকে দেখা যাচ্ছে তিনি এই জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেই সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া একই অফিসের অফিস সহায়ক সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা।

টিআর/