ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

রাজশাহীর সব ওসিকে আদালতের সতর্কতা

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:৫৭ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার

আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থাপনের বিষয়ে রাজশাহীর সব থানার ওসিদের সতর্ক করা হয়েছে। সোমবার রাজশাহীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এক আদেশে ওসিদের প্রতি এই সতর্কতা জারি করেন। 

আসামি আটকের পর নিয়মিত আদালতে সোপর্দ না করে সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থাপনের বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে রাজশাহীর সব থানার ওসিদের চিঠি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন।

তিনি জানান, আদেশে আদালত বলেছেন, সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, রাজশাহীর বিভিন্ন থানার ওসিরা আসামি আটকের পর নিয়মিত আদালতে সোপর্দ না করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারদের (এসি ল্যান্ড) নিকট উপস্থাপন করছেন। এরপর এসব ম্যাজিস্ট্রেটরা মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ বিধান লঙ্ঘন করে আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিচ্ছেন। যা দেশের সংবিধান এবং প্রচলিত অন্যান্য আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। 

অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন বলেন, রাজশাহীর ওসিদের দিক নির্দেশনা দিয়ে আদালতের এই আদেশে বলা হয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত-২০০৯ এবং উচ্চ আদালতের রায়ের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহায়তা করার কোনো সংবাদ আদালতের গোচরীভূত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টকে অবহিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আদালতের এ আদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন-২০০৯ এর ৬ (১) ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই আইনে বলা হয়েছে যে, কেবল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য অপরাধ তার সামনে ঘটেছে এমন হয়ে থাকলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করে এ আইনের নির্ধারিত দণ্ড আরোপ করতে পারবেন।

আইনজীবী ইব্রাহীম হোসেন জানান, আদেশের এই অনুলিপি রাজশাহীর সব থানার ওসি ছাড়াও আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, জেলা ও দায়রা জজ, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি), রেলওয়ে পুলিশের এসপি, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এসপি, রাজশাহীর সকল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপ-পরিচালককে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে আদেশের কপি সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে।

আদেশে ২০১৭ সালে টাঙ্গাইলের সখিপুরের ইউএনও’র আইনবহির্ভূত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য উচ্চ আদালতের দেয়া একটি রুলের সিদ্ধান্তও তুলে ধরা হয়েছে রাজশাহীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশে। উচ্চ আদালতের ওই রায়ের মাধ্যমে আইনবহির্ভূত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য সখিপুরের ইউএনও এবং ওসির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।