ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সমাজ অবক্ষয়ের ফলে এই ব্যভিচার, ইসলাম কী বলে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৮ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০১৯ বুধবার

বর্তমান সমাজে ব্যভিচার ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। সমাজের উঁচু স্তর থেকে শুরু করে নিম্নতম স্তরের অনেকেই ব্যভিচারে লিপ্ত। এ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে সর্বস্তরের মানুষ। এগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ায় এ থেকে পথভ্রষ্টও হচ্ছে কিছুসংখ্যক মানুষ।

ইসলাম ব্যভিচারকে সুস্পষ্ট হারাম ও জঘন্য অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করেছে। এই অপরাধের কঠিন শাস্তির বিধানও রয়েছে ইসলামে। 

পবিত্র কোরআন মজিদের সুরা আল ইসরার ৩২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীন বলেন, ‘ব্যভিচারের কাছেও যেয়োও না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’  

বিবাহবহির্ভূত যে কোনো যৌন সঙ্গমই পবিত্র ইসলাম ধর্মে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য। ইসলামি আইনে ব্যভিচারকারীর কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং তাঁর সাহাবীদের আমল থেকে ব্যভিচারকারীকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হতো।  কেউই এই শাস্তি থেকে রেহাই পেতো না।

ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি ব্যক্তিভেদে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্যভিচারী বা ধর্ষক যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর ধর্ষক যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশ’ ছড়ি মারার বিধান রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘ব্যভিচারিণী নারী-ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে একশ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করার কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’ (সূরা নূর, আয়াত ২)

হাদিসে বলা হয়েছে, ‘অবিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে শাস্তি একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে একশ’ বেত্রাঘাত ও পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড। (সহিহ মুসলিম) 

ধর্ষণের ক্ষেত্রে একপক্ষে ব্যভিচার সংগঠিত হয়। আর অন্যপক্ষ হয় নির্যাতিত। তাই নির্যাতিতার কোনো শাস্তি নেই। কেবল অত্যাচারি ধর্ষকের শাস্তি হবে।

বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের কারণে মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডে বিধান করা হয়েছে। ইসলামে আইনে বিবাহিত কেউ ধর্ষণ বা ব্যভিচার করলে তার শাস্তিও পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলেছে।

ব্যভিচারে কেন জড়িয়ে পড়ছে মানুষ? তার কারণ হিসেবে ইসলামি চিন্তাবিদরা মনে করছেন-

- নৈতিকতার অবক্ষয়
- পর্দার লংঘন
- অশালীন পোশাক-আশাক
- ফোনে অতিরিক্ত কথাবার্তা
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করা
- প্রযুক্তির অপব্যবহার
- সামাজিক অবক্ষয়
- প্রকৃত শিক্ষার অভাব
- পাশ্চাত্যের অপসংস্কৃতি
- অভিভাকের উদাসীনতা
- দুর্নীতি ও অনৈতিকতা
- সম্পদের মোহ
- পদোন্নতি

সুতরাং সমাজের নৈতিকতা উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে হবে। যার যা অধিকার প্রাপ্য তা নিশ্চিত করতে হবে, প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করতে হবে এবং উপযুক্ত বন্ধু বাছাই করতে হবে। যেকোন ন্যায়ানুগ কাজে সহযোগী হতে হবে এবং অন্যায়কে প্রতিরোধের মানসিকতা গড়তে হবে। তবেই সমাজের এই অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব।

এএইচ/