ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

নয়ন বন্ডের সঙ্গে পুলিশের ৭৭ বার কথা হয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৩০ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০১৯ বুধবার

বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যার প্রধান আসামী নয়ন বন্ড কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার আগে মুঠোফোনে খোদ পুলিশের সঙ্গেই কথা হয়েছে ৭৭ বার।

বুধবার আদালতে এমনটি দাবি করেছেন শাহ শরীফ নেওয়াজ রিফাতের (রিফাত শরীফ) স্ত্রী ও এ মামলার প্রধান সাক্ষীতে আসামী হওয়া আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী। আদালতে মিন্নির জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তার সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, মশিউর রহমান ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার মিন্নির জামিনের বিষয়ে রায় দেবেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

মামলার সব নথি নিয়ে বুধবার দুপুরে হাইকোর্টে উপস্থিত হন তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে রিফাত হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ২০ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে বলেন, ‘রিফাত হত্যার তদন্ত একেবারে শেষ পর্যায়ে।’ মিন্নির দায় স্বীকারের বিষয়ে বরগুনা পুলিশ সুপারের বক্তব্যের সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার দেয়া তথ্যের কোনো মিল নেই বলে আদালত জানান।

মিন্নির আইনজীবী এ সময় বলেন, `একটি মানুষের ফোনে প্রতিদিন অনেক কল আসতে পারে। এ সময় একটি জাতীয় দৈনিকের তথ্য তুলে ধরে বলেন, পত্রিকায় তথ্য আছে ওই ঘটনার আগে ৭৭বার পুলিশের সঙ্গে নয়নের কথা হয়েছে। বরগুনা থানার এসআই আসাদুজ্জামানের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। আপনারা মিন্নিকে জামিন দিন, প্রয়োজনে আমি তার গ্যারান্টার থাকব।' 

রিফাত হত্যার আগে ৮ বার ও হত্যার পর আরও ৫ বার মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের টেলিফোনে কথা হয় বলে আদালতকে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই ভোরে বরগুনার পুরাকাটার পায়ারা নদীর পাড়ে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন রিফাত হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড। 

এর আগে গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও গণমাধ্যমে প্রচার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃস্টি হয়। 

এরপর ২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সন্দেহভাজন আরও চার পাঁচজন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এদিকে ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বক্তব্য রেকর্ড করতে মিন্নিকে বরগুনা পুলিশলাইন্সে নিয়ে আসা হয়। দীর্ঘ ১০ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এসি