ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধ ৩৩ হাজার মালয়েশিয়ান নিয়ে তোলপাড়

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৩৫ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার

অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধ ৩৩ হাজার মালয়েশিয়ান নাগরিকের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, ওই সব মালয়েশিয়ান নাগরিক অস্ট্রেলিয়ায় ট্যুরিস্ট ভিসায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। দেশে ফেরত না এসে তারা অবৈধভাবে দেশটিতে বসবাস শুরু করেন। খবর- মালয় মেইল।  

এদিকে, অস্ট্রেলিয়ায় গত কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বসবাসের দায়ে শাস্তির সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন ওই ৩৩ হাজার মালয়েশিয়ান নাগরিক। অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধ হবার খবরে স্থানীয় নাগরিকসহ মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বিদেশিদের মাঝে চলছে মুখরোচক আলোচনা। মালয়েশিয়া সরকার এখন কি করবে সেই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে।  

মালয়েশিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার অ্যান্ড্রু গোল্ডজিনোভস্কি বলেছেন, গত কয়েক বছরে প্রায় ৩৩ হাজার মালয়েশিয়ান নাগরিক যারা অস্ট্রেলিয়ায় ভিজিট ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর শরণার্থীর মর্যাদার জন্য আবেদন করেছে। মালয়েশিয়ার প্রায় ১০ হাজার ৫০০ জনের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে, আমাদের ৩৩ হাজার মালয়েশিয়ার নাগরিক রয়েছে- সিরিয়ান নয়, রোহিঙ্গা নয় -যারা অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থী হিসেবে আবেদন করেছেন।

গোল্ডজিনোভস্কি বলেছেন, আমরা শরণার্থীদের গুরুত্ব সহকারে নিই। ইদানিং শরণার্থীদের এত বেশি সংখ্যক আবেদন পড়ছে যে, কোনটি বৈধ এবং কোনটি ভুয়া তা নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

গত মাসে দেশটির সরকার প্রকাশ করেছে যে, অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের এপ্রিলের মধ্যে মালয়েশিয়ার কাছ থেকে শরণার্থী ভিসার জন্য ৪ হাজার ৯৭৩টি আবেদন পেয়েছে।

মালয়েশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক মারজুকি ইয়াহিয়া বলেছেন, আবেদনকারীরা পারিবারিক চাপ, বর্ণ ও ধর্মীয় বৈষম্য এবং গৃহ নির্যাতনসহ বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছেন।

গোল্ডজিনোভস্কির মতে, মালয়েশিয়ার মধ্যে ভিসার অপব্যবহার দেশটিকে লজ্জাজনক অবস্থানে ফেলে দিয়েছে। তবে শিক্ষা এবং প্রচারের মধ্যদিয়ে ক্যানবেরা এবং কুয়ালালামপুর উভয়ই এক হয়ে এই অপব্যবহারকে হ্রাস করতে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেছেন, যদিও কিছু কর্মীর এজেন্টরা কাজ করার অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ানদের অবশ্যই অবহিত ও সতর্ক থাকতে হবে।

হাইকমিশন কর্মকর্তা বলেন, আমি মনে করি না যে, কাগজের অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে ফিরে যাওয়াটা আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। মালয়েশিয়ানরা বৃহত্তরভাবে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের প্রশংসা করে।

গোল্ডজিনোভস্কি আরও প্রকাশ করেছেন, প্রতি বছর ৩-৪ হাজার মালয়েশিয়ান অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান এবং দেশে রিয়েল এস্টেটের দাম বাড়িয়ে তোলে। 

জানা গেছে, যে মালয়েশিয়ানরা মোট ৪৫৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (আরএমপি ৩.৩ বিলিয়ন) সম্পত্তি ছিনিয়ে নিয়েছে। তবে রাষ্ট্রদূত মনে করেন, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ায় রিয়েল এস্টেট ঐতিহ্যগতভাবে একটি শিল্প। মালয়েশিয়ানরা অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে খুব ভাল জানেন এবং তারা সেখানে বিনিয়োগ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। অনেক ক্রেতার সেখানে সন্তান রয়েছে। সুতরাং তারা তাদের থাকার জন্য সম্পত্তি বা কোনও জায়গা কিনে। তারা জানে যে, অস্ট্রেলিয়া একটি নির্ভরযোগ্য গন্তব্য, যেখানে রয়েছে খুব কম সার্বভৌম ঝুঁকি এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ম কানুন।

এনএস/